চৌগাছায় কৃষকের ঘরে উঠছে সোনালী স্বপ্ন

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ২২, ২০২৪, ০১:২৩ পিএম

যশোরের চৌগাছায় ইরি ধান কাটা শুরু হয়েছে। ঘরে উঠবে কৃষকের সোনালী স্বপ্নের ধান। মাঠজুড়ে বাতাসে দুলছে কৃষকের সোনালি ধান। পোকার আক্রমণ আর নানা রোগবালাইয়ের পরও এবারও ইরি বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।

উপজেলার কৃষক পরিবারে বইছে পাকা ধানের মৌ মৌ গন্ধ। মাঠে মাঠে আনন্দে মাতুয়ারা সোনালী ধানের শিষ। প্রতিটি ধানের শিষে যেন কৃষকের রক্তপারি করা ক্লান্তি মাখা জীবনের স্বপ্ন নির্ভর করছে। তার পরেও বাম্পার ফলন আর বাংলা নববর্ষের আনন্দে মাঠে মাঠে ধান কাটার উৎস বইছে। পাঁকা ধানের শিষে সূর্যের সোনালী রোদ যেন খেলায় মেতেছে। কৃষাণ-কৃষাণীরা মনে বইছে আনন্দ আর মুখভরা হাঁসি।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম জানান, এ বছর ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৮ হাজার ৩০০ হেক্টর। চাষ হয়েছে ১৮ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৮০০মেট্রিকটন।

উপজেলা জুড়ে ধানের বাম্পার ফলনে বাধ-ভাঙ্গা আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠেছে কৃষকরা। দিগন্ত জুড়া সোনালী ফসলের মনোরম দৃশ্য যেন পেতে রাখা গালিচা। আমাগ রোপণ করা ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে এক সপ্তাহ পরে শুরু হবে ধানকাটার মহোৎসব। ব্যস্ততম সময় কাটাবেন কৃষক-কৃষানীদের। প্রচণ্ড তাপদাহে খুব সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে সোনালী স্বপ্ন ঘরে তোলার কাজ।

উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, তার তিন বিঘা জমির ধান কাটা হয়েছে। ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তার পরেও ধান চাষে যে খরচ হয়েছে তাতে কম পক্ষে ১৫’শ টাক মন দরে ধান বিক্রি করতে পারলে ভাল হবে।

হাজরাখানা গ্রামের আব্দুল কাদের, আন্দারকোটা গ্রামের কৃষক নুরুন্নবী, ইউনুচ অলী, মিজানুর রহমান, আবু কালাম, টেঙ্গুরপুর গ্রামের মোস্তফা খান ও নুরুজ্জামান বলেন, এক বিঘা জমিতে ধান ফলাতে জমি প্রস্তুত থেকে ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। তবে যারা বিদ্যুৎচালিত সেচপাম্পের পানি এবং নিজেরাই পরিচর্যা করেছেন তাদের জন্য খরচ একটু কমবে। সেক্ষেত্রে প্রতি মন ধান ১৫’শ টাকার উপরে বিক্রি করতে পারলে তাদের আসল ঘরে আসবে। তবে গরুর খাদ্য হিসেবে ধানের বিচালি করতে পারলে কিছুটা বেঁচে যান কৃষক।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসাব্বির হোসাইন বলেন, এ বছর আবহাওয়া ভালো তাই ধানের ফলন ভালো হবে। তাপে ধানের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। ইতোমধ্যে কৃষকরা ধান কাটতে শুরু করেছেন। উপজেলা কৃষি অধিদফতরের পক্ষ থেকে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দিয়ে রোবধান কাটা হবে। এতে শ্রমিক সংকট অনেকটা কমে আসবে। তা ছাড়া যেসব ক্ষেতে ধান পেকেছে সেসব ক্ষেতের ধান দ্রুত কাটার জন্য আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি।

ইএইচ