চলছে মধ্য বৈশাখ। তবুও নাটোরে দেখা নেই কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির। যেখানে বৈশাখ মাস শুরু হলেই পশ্চিমা কাশ কালো মেঘে ছেয়ে মুষলধারে বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা। সেখানে দেশের বৈরি আবহাওয়ার প্রভাবে নাটোরে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নাটোরের জনজীবন।
নাটোরের অন্যান্য উপজেলায় কিছু পরিমাণ বৃষ্টিপাত হলেও নাটোর সদরের চিত্র একেবারেই আলাদা। চৈত্র্যের মাঝামাঝি নাটোর সদরে হালকা বৃষ্টি হলেও বিগত দেড় মাস যাবৎ নাটোর সদর বৃষ্টিশূন্য।
কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নাটোর সদরের পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নের অনেক এলাকার টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। স্থানীয় ভাষায় বলে টিউবওয়েল জবাব দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ ভরসা খুঁজছে সাবমারসিবলের উপরে।
নাটোর পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, যে প্রায় বাড়ির টিউবওয়েলেই পানি উঠছে না। আবার বাজার সংলগ্ন এলাকায় যে টিউবওয়েলগুলো সাধারণ মানুষদের পানি ব্যবহারের জন্য বসানো আছে সেগুলোতেও পানি উঠছে।
নাটোর পৌরসভার পাশে নীচাবাজারের ব্যবসায়ী জয় সাহা বলেন পৌরসভার সামনের টিউবওয়েলে পানি নেই। এখন আমরা নীচাবাজারের ভিতরে মুরগী পট্টিতে বসানো সাবমারসিবল থেকে পানি নিয়ে আসি।
তেবাড়িয়া ইউনিয়নের উত্তরপাড়া এলাকার শ্রমজীবী রোখসানা, রাজ্জাক, রুবেল বলেন, তাদের বাড়ির টিউবওয়েলে পানি না থাকায় কিছু দূরে এক বাড়ির সাবমারসিবল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে পানি নিয়ে আসি।
তীব্র গরমে পানির তেষ্টা মেটাতে কেউ তরমুজ কিনে খাচ্ছে, কেউ খাচ্ছে আখের রস। আবার কেউ রাস্তায় পাইপের সাহায্যে পানি ছিটিয়ে ধুলা থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা চালাচ্ছে। ছোট ছোট বাচ্চারা গরম থেকে স্বস্তি পেতে পুকুরের পানিতে করছে ঝাঁপাঝাঁপি। থার্মোমিটারে কয়েকদিন ধরেই নাটোরের তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস দেখাচ্ছে।
এই তীব্র গরমে আত্মরক্ষার জন্য নাটোর জেলা প্রশাসন থেকে সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছে। গবাদি পশুদের তীব্র গরমে সুস্থ রাখার জন্যও সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছে জেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয় থেকে।
বৃষ্টিহীন নাটোরে চলতে থাকা তীব্র তাপদাহ থেকে রক্ষা পেতে শুক্রবার বেলা আড়াইটায় নাটোর এনএস সরকারি কলেজ মাঠে ইমান আকীদা সংরক্ষণ কমিটি নাটোর জেলা শাখার উদ্যোগে ইসতিসকার নামাজের বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে।
এছাড়াও নাটোরের বিভিন্ন উপজেলাতে বৃষ্টির জন্য বিশেষ এই নামাজ পড়া হয়েছে।
ইএইচ