জেলেদের মারধরের অভিযোগ

জলদস্যুর রূপ ধরেছেন মনপুরার মৎস্য কর্মকর্তারা

মনপুরা (ভোলা) প্রতিনিধি: প্রকাশিত: মে ৫, ২০২৪, ০৪:৫০ পিএম

ভোলার মনপুরায় জলদস্যু স্টাইলে জেলেদেরকে মারধর করে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে মৎস্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। মেঘনায় মাছ ধরে বিক্রি করে আসার সময় দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত ৩ টি স্পিড বোট যোগে এসে জেলেদের মাছধরা ট্রলারে উঠে হাত-পা বেঁধে মারধর করে।

এসময় জেলেদের সাথে থাকা মাছ বিক্রি করা নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় ওই মৎস্য কর্মকর্তারা। উক্ত ঘটনায় মারধরের স্বীকার জেলেরা বাদী হয়ে মনপুরা থানায় অভিযোগ করেন।

শনিবার (০৪ মে) দুপুর আড়াই টায় উপজেলার ১ নং মনপুরা ইউনিয়নের আন্দিরপাড় সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এই ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১ নং মনপুরা ইউনিয়নের বিপ্লব মাঝি ও নাইম মাঝির মাছধরা নৌকা দুটি মেঘনায় ইলিশ মাছ ধরে নোয়াখালির চেয়ারম্যান ঘাটে বিক্রি করে আসছিলো। এসময় দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ৩ টি স্পিড বোট নিয়ে উপজেলা মৎস্য অফিসের মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে একদল মৎস্য কর্মকর্তা জেলেদেরকে ধাওয়া করে।

পরে তারা জেলেদের নৌকায় উঠে জেলেদের হাত পা বেঁধে লোহার রড ও লাঠিসোঁটা দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে জখম করে। এসময় জেলেদের সাথে থাকা মাছ বিক্রি করা নগদ ৪৩,৫৮০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এবং এ বিষয়ে কাউকে জানাজানি বা বাড়াবাড়ি করলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে উপজেলার সোনার চর নামক স্থানে জেলেদেরকে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়।

পরে স্থানীয়রা জেলেদেরকে উদ্ধার করে মনপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে উক্ত মারধর ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জেলেরা বাদী হয়ে মনপুরা থানায় অভিযোগ করেন।

জানা যায়, বিভিন্ন উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত এই যৌথ টিমে আরও ছিলেন, ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলা মৎস্য অফিসার মোঃ আল আমিন, মাদারীপুর জেলা মৎস্য অফিসের সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আসলাম হোসেন, চাঁদপুর মৎস্য অফিসের মোঃ রিয়াদ হাসান, চাঁদপুর অফিসের ক্ষেত্র সহকারী আশরাফুল ইসলাম ও জসিম হোসেন, নরসিংদী মৎস্য অফিসের ইসহাক আলী, মোঃ শুভ ও মোঃ সুজন।

এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগকারী বিপ্লব মাঝি বলেন, মনপুরার মৎস্য কর্মকর্তারা অভিযানের নামে একাধিকবার আমাদেরকে মারধর, টাকা ছিনতাই ও জিম্মি করে টাকা আদায় করেছে। থানায় বহুবার অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাইনি। এবারও আমাদের সাথে একই ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত সাপেক্ষে উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই আমরা।

অভিযোগ অস্বীকার করে মনপুরা মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, আমাদের জেলা অফিসের নির্দেশে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মেঘনায় একটি যৌথ টিম অভিযান পরিচালনা করে। আমি তাদের সাথে ছিলাম না। এবং এ ব্যাপারে তেমন কিছুই জানি না।

এব্যাপারে মনপুরা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান, মেঘনায় জেলেদেরকে মারধরের অভিযোগ পেয়েছি। অনুসন্ধান পূর্বক মৎস্য বিভাগীয় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিআরইউ