হয়রানির আরেক নাম সিএ কামরুল

নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৪, ০৬:০৭ পিএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে সেবা গ্রহীতা সাধারণ মানুষের কাছে হয়রানির অপর নাম হয়ে উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা সিএ কামরুল ইসলাম ভুঁইয়া।

তথ্যসূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে বিজয়নগরে ঘুষ দুর্নীতির দায়ে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর সাময়িক শাস্তিতে পেয়ে বদলি হয়। ২০২১ সালে এই উপজেলায় যোগদানের পর থেকে এমন কোনো সেক্টর নাই যেখান থেকে ঘুষ গ্রহণ করেন না এই কর্মকর্তা।

চাহিদা অনুযায়ী ঘুষ দিতে দেরি হলেই নিজের মনগড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের ব্যবস্থা করে মোটা অঙ্কের জরিমানা ও জব্দ করে সে। এসব ভ্রাম্যমাণ আদালতে তার ব্যক্তিগত আক্রোশ ও মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে বেশিরভাগ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার ভূমিকে ভুলে বুজিয়ে ব্যবহার করে থাকে।

প্রায়ই দেখা যায়, ভ্রাম্যমাণ আদালতে সে নিজে উপস্থিত থেকে অবৈধ ড্রেজার ও ভেকু মেশিন জব্দ করে পরে আবার টাকার বিনিময়ে এগুলো ছেড়ে দেয়। এতে করে তার পকেট ভারী হচ্ছে আর রাষ্ট্র হারাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব। এছাড়া বিভিন্ন ইজারার জামানতের টাকা ফেরত পেতে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে তার নামে।

এ বিষয়ে খেয়াঘাটের ইজারাদার চরগোসাইপুর গ্রামের ইকবাল জানান, খেয়াঘাটের ইজারার জামানতের টাকার পেতে ২ মাস যাবত ঘুরতেছি, কিন্তু এই কামরুল তাকে আসলেই তারিখের পর তারিখ দিচ্ছে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেয়ায় সাংবাদিকদের সাথে খারাপ আচরণ করে এবং আমাকে তার রুমে বেঁধে পিটানোর কথা বলে গালমন্দ করে।

দৈনিক কেদেরখলা বালু মহল থেকে ৭০ হাজার টাকা করে নিত কামরুল এমন অভিযোগ এনে বীরগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আফজাল হোসেন জানান, কামরুল আমাদের উপজেলাকে লুটেপুটে খাচ্ছে, আমাদের বালু মহল থেকে প্রতিদিন ৭০ হাজার টাকা করে নিত। ২ দিন দিতে দেরি হওয়ায় তীরে ভিড়ে থাকা ড্রেজার জব্দ করে সাড়ে তিন লাখ টাকা নিয়ে ছেড়েছে। জাফরাবাদ বালু মহল থেকে প্রতিদিন ৪ লাখ টাকা করে নেয়ার কথা শুনছি।

তীরে ভিড়ে থাকা অবস্থায় জব্দ করা ড্রেজার মালিক আমজাদ জানান, তার মতো দুর্নীতিবাজের ফাঁসি হওয়া উচিত। বালু মহলের ইজারাদাররা তাকে ঘুষের টাকা দিতে দেরি করায় আমার তীরে থাকা ড্রেজারে ধরে নিয়ে গেছে, পরে রাতে সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়ে ছেড়ে এনেছি।

ড্রেজার জব্দ করে রাতে ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে নবীনগর সহকারী কমিশনার ভূমি মো. আবু মুসার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ড্রেজার জব্দ করে ইউএনও অফিসের দায়িত্বে দিয়ে এসেছি, এরপর কি হয়েছে তা আমি জানি না।

সকল অভিযোগের বিষয়ে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম ভুঁইয়া তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ ডাহা মিথ্যা কথা, প্রমাণ দিতে পারলে চাকরি করবে না বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান জানান, ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে  বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইএইচ