নোয়াখালীর সুবর্ণচরে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে ১১টি দোকান ও ১টি বাড়িতে।
বুধবার সন্ধ্যায় নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর উপজেলা পরিষদের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে চরজব্বার ইউনিয়নের চেউয়াখালী, চর হাসান ভূঁইয়ার হাট বাজার ও পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের ভাঙচুর এলাকা এসব পাল্টাপাল্টি হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন মো. এমরান, মো. হাশিম, মো. নুর মোহাম্মদ, মো. আশরাফ হোসেন, ছালাহ উদ্দিন, পারভেজ হোসেন ওরফে বাবলু, মো. মোস্তফা, মো. লোকমান হোসেন, মো. কালা মিয়া, মো. জাকের হোসেন, মো. আলতাফ হোসেন, মো. ছেরাজ, আবুল হাসেম, মো. আরিফ, রিয়াজ ভুঁইয়া। তাঁদের মধ্যে ছেরাজ, হাসেম, আরিফ ও রিয়াজ ভুঁইয়া চেয়ারম্যান পদে বেসরকারি ফলাফলে বিজয়ী আতাহার ইশরাক শাবাব চৌধুরীর সমর্থক। অন্যরা একই পদে পরাজিত এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরীর অনুসারী।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছালাহ উদ্দিনের অবস্থা শঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনার পর থেকে চেউয়াখালী ও চর হাসান ভূঁইয়ার হাট বাজার এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে চেউয়াখালী বাজারে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি চরজব্বার এলাকায়ও পুলিশের একাধিক টিম সার্বক্ষণিক টহলে রয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোটেরদিন সন্ধ্যায় বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে নির্বাচনের ফলাফল আসতে শুরু করলে চেউয়াখালী বাজারে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে তর্কবিতর্কের জেরে পাল্টাপাল্টি হামলা শুরু হয়।
চেউয়াখালী বাজারের শাহজাহান ট্রেডার্স, মিজান ট্রেডার্স, রহমান ফার্নিচার, রহমান ক্রোকারিজ, রহমান ইলেকট্রনিকস, রহমান সন্স, ভুঁইয়া ট্রেডার্স, ভুঁইয়া ইলেকট্রনিকস, সালাহ উদ্দিন স্টোরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া ভূঁইয়ার হাট বাজারে মো. হারুন নামের এক ব্যক্তির দুটি দোকান ও বাজারের পার্শ্ববর্তী আবু তাহের মাঝির বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর হয়।
দোয়াত কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরীর সমর্থক ও চরজব্বার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক বলেন, আনারস প্রতীকের আতাহার ইশরাক শাবাব চৌধুরীর অনুসারীরা প্রথমে হামলা ও ভাঙচুর করেন।
তবে আনারস প্রতীকের সমর্থক ও চরজব্বার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তরিক উল্যাহ বলেন, দোয়াত কলম প্রতীকের সমর্থকেরা তাদের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন, এমন ভুয়া তথ্যে মিছিল থেকে হামলার সূত্রপাত করেছেন।
দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম বলেন, ভোটে হার জিত থাকে কিন্তু এভাবে কারো সমর্থকের উপর এমন হামলা লজ্জাজনক। এসব ঘটনা যারা ঘটাচ্ছে তারা দুষ্কৃতকারী। এসময় তিনি সকলকে ধৈর্য ধারণ করার অনুরোধ করেছেন।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাউসার আলম ভুঁইয়া বলেন, পাল্টাপাল্টি হামলার পর চেউয়াখালী বাজারে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে দোয়াতকলমের সমর্থকরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি।
ইএইচ