দুই সন্তানের জননী এক নারীকে ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কামড়িয়ে রক্তাক্ত করা হয়। পরে ওই নারীর ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এলে পালিয়ে যায় ধর্ষণের চেষ্টাকারী জলিল মাতুব্বর নামে এক ব্যক্তি।
ঘটনাটি ঘটে মোংলা পৌর শহরতলীর সিগন্যাল টাওয়ার এলাকায় গত ৯ মার্চ সকাল ৯টায়। তবে এ ঘটনায় থানায় কয়েক দফায় এজাহার নিয়ে গেলেও মামলা নেয়নি মোংলা থানার ওসি কেএম আজিজুল ইসলাম।
এদিকে মামলা না নেওয়ার অভিযোগে নিরুপায় হয়ে গত বৃহস্পতিবার বাগেরহাট প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী ওই নারীর খালা নাছিমা বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, গত ৯ মার্চ তার বোনের মেয়ে দুই সন্তানের জননীর (২৮) স্বামী-সন্তান বাড়িতে না থাকার সুযোগে তার ঘরে প্রবেশ করে স্থানীয় জলিল মাতুব্বর। এ সময় তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কামড় দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় তার ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে জলিল মাতুব্বর পালিয়ে যায়। পরে তার বোনের মেয়েকে ওইদিন রাতে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনা স্থানীয় লোকজনকে জানালে আরও ক্ষীপ্ত হয়ে জলিল মাতুব্বর তার পরিবারের আরও ছয়জনকে মারপিট করে ঘরে ভাঙচুর চালায়। পরে জলিল মাতুব্বরকে আসামি করে মোংলা থানায় ধর্ষণ মামলা করতে যান তিনি। এ মামলায় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়রের তালুকদার আব্দুল খালেকের লিখিত সুপারিশও রয়েছে।
তবে থানায় এজাহার নিয়ে যাওয়া ধর্ষণ চেষ্টার শিকার ওই নারীর খালা নাছিমা বেগমকে ওসি কেএম আজিজুল ইসলাম থানা থেকে বের করে দেয় বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন তিনি। এরপর মামলা করতে কয়েক দফা থানায় গেলেও ওসি নানা অজুহাত দেখিয়ে মামলা আর নেননি। মামলা করতে থানায় যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৬ মে বিকেলে আবারো নাছিমা বেগমসহ তার ছেলে শিমুল, পুত্রবধূ হাফিজা ও নাতি ওমরের ওপর হামলা চালায় জলিল মাতুব্বর।
এ হামলার ঘটনায়ও এজাহার নিয়ে গেলে থানায় মামলা নেয়নি পুলিশ। ধর্ষণচেষ্টা ও হামলার ঘটনার মামলা না নেয়ায় ভুক্তভোগীরা এ সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী এ পরিবার।
এ বিষয়ে মোংলা থানার ওসি কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের বিষয়টি তার জানা নেই। আর মারামারির ঘটনায় থানা থেকে বের করে দেয়া হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, এজাহারের সাথে তাদেরকে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে আসতে বলা হয়েছিল। পরে তারা আর আসেননি। এজন্য ওই মামলাও নেয়া হয়নি, তবে অভিযোগটি তদন্ত দেয়া হয়েছে।
তবে হামলার শিকার শিশু মো. ওমরের (৭) মা হাফিজা বেগম বলেন, ওসি মিথ্যা বলেছেন। মামলা করতে এজাহারে যাবতীয় সব কাগজপত্র নেওয়া হলেও ওসি কেএম আজিজুল ইসলাম থানা থেকে তাদেরকে বের করে দেন।
এ ব্যাপারে বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আবুল হাসনাত খাঁন বলেন, বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যেসব অভিযোগে ওসি মামলা নেয়নি, সেই অভিযোগগুলোর কপি তার হোয়াটসঅ্যাপে দিতে বলেন তিনি।
ইএইচ