৩ বছরে ফেনী সদর উপজেলা চেয়ারম্যানের সম্পদ বেড়েছে ৭ গুণ

ফেনী প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২৪, ০৬:২০ পিএম

মাত্র তিন বছরে ফেনী সদর উপজেলার চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীলের সম্পদ বেড়েছে ৭ গুণ ও আয় বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। ২০২১ সালে উপনির্বাচনে প্রথমবার এ পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি।

এবারও দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন শীল। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় তিনি নিজেই এসব তথ্য উল্লেখ করেছেন।

রোববার ওই হলফনামা থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা যায়, গত ৩ বছরে তার আয় বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। পাশাপাশি সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ৭ দশমিক ৭০ গুণ।

এছাড়াও হলফনামায় তিনি নিজের আয়ের উৎস হিসেবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, আমদানি ও রপ্তানি ব্যবসার কথা উল্লেখ করেছেন।

এর মধ্যে ২০২১ সালে উপনির্বাচনে অংশ নিতে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় শুসেন শীল তার বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ২ কোটি ৪৭ লাখ ৪২ হাজার ৬৯২ টাকা। এবারের দাখিল করা হলফনামায় তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৪৫ লাখ ৭৯ হাজার ২২১ টাকায়। সে হিসেবে ৩ বছরের ব্যবধানে এ উপজেলা চেয়ারম্যানের আয় বেড়েছে ১ দশমিক ৮০ গুণ।

তাছাড়া ২০২১ সালে দাখিল করা হলফনামায় তার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ২৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ৫২ লাখ ৬৫ হাজার ৮৮৯ টাকায়। সে হিসেবে ৩ বছরের ব্যবধানে তার মোট সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ৭ দশমিক ৭০ গুণ।

অন্যদিকে ২০২১ সালের হলফনামায় এ উপজেলা চেয়ারম্যানের কৃষি, শেয়ার-সঞ্চয়পত্র থেকে কোনো আয় ছিল না। নিজের একমাত্র আয়ের উৎস হিসেবে ব্যবসা থেকে বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন তিনি।

এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দাখিলকৃত হলফনামায় তার বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ৪ কোটি ৪৫ লাখ ৭৯ হাজার ২২১ টাকা। এ আয়ের খাত হিসেবে দেখানো হয়েছে ব্যবসা থেকে ৪ কোটি ৪০ লাখ ৩৯ হাজার ২২১ টাকা ও অন্যান্য খাতে (সম্মানী ভাতা) ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

তবে, হলফনামায় প্রার্থীর (শুসেন চন্দ্র শীলের) ওপর নির্ভরশীলদের কোনো আয়ের তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হলফনামায় তার ১৬৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ স্থাবর সম্পদ (অকৃষি জমি)। যার অর্জনকালীন সময়ের আর্থিক মূল্য ২ কোটি ১৪ লাখ ৬ হাজার ৭০০ টাকা।

এর মধ্যে একটি দালান ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, দুইটি বাড়ি ৪২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং এক দশমিক ৭৭ শতাংশ জায়গায় একটি পুরাতন বিল্ডিং ৩২ লাখ ২ হাজার টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে ২০২১ সালের হলফনামায় একমাত্র স্থাবর সম্পদ হিসেবে তিনি ৩৫ দশমিক ২৫ শতাংশ (অকৃষি জমি) অর্জনকালীন সময়ের আর্থিক মূল্য ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকার তথ্য উল্লেখ করেছিলেন।

এবারের হলফনামা শুসেন চন্দ্র শীল তার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে উল্লেখ করেছেন নগদ ১ কোটি ৮০ লাখ ২৯ হাজার ৮৬৩ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৩ কোটি ৩০ লাখ ৪১ হাজার ২৯৮ টাকা, ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি জিপ, ২৯ লাখ ৯৫ হাজার টাকার দুটি ডাম্প ট্রাক।

এছাড়া উপহার হিসেবে পাওয়া ৭০ হাজার টাকার ১০ তোলা স্বর্ণালংকার (তৎকালীন মূল্য), ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৫০ হাজার টাকা, আসবাবপত্র ৫০ হাজার টাকা, ৩৬ লাখ ৯৬ হাজার ২৮ টাকা ব্যবসায়ের পূর্বের পুঁজি এবং পূর্বের রোলার ও শর্টগান ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

অন্যদিকে ২০২১ সালে নির্বাচন কমিশনে দাখিলকৃত হলফনামায় অস্থাবর সম্পদের মধ্যে উল্লেখ করেছেন নগদ ১ লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৫ লাখ টাকা, ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার একটি জিপ, ২৯ লাখ ৯৫ হাজার টাকার দুইটি ডাম্প ট্রাক।

এছাড়া উপহার হিসেবে পাওয়া ৭০ হাজার টাকার ১০ তোলা স্বর্ণালংকার, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৫০ হাজার টাকা, উপহার হিসেবে পাওয়া আসবাবপত্র ৫০ হাজার টাকা ও ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার রোলার ও শর্টগান ছিল। একই হলফনামায় স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৫০ হাজার টাকা জমার কথা উল্লেখ ছিল।

ইএইচ