ফেসবুক পরিচয়ে প্রেম করে ভৈরব মেঘনা নদীর পাড়ে ঘুরতে এসে প্রেমিকাকে ধর্ষণ করল প্রেমিকসহ দুজন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সহযোগীসহ মোট ৮ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৭টায় ঘটনাটি ঘটে ভৈরব মেঘনা নদীর পাড় রেলওয়ের জোড়া সেতু সংলগ্ন এলাকায়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- প্রেমিক ও ধর্ষণে অভিযুক্ত পলাশ দাস (১৮), রাব্বি (১৯), ধর্ষণে অভিযুক্ত নির্জন ওরফে আরিয়ান (১৭), সান (১৭), আবদুল্লাহ (১৮), পাপন (১৮), হাসান (১৭), ফুয়াদ (১৯)।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতেই প্রেমিকার বাবা বাদী হয়ে ভৈরব থানায় একটি মামলা করেন।
ভুক্তভোগী ওই প্রেমিকার বাড়ি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলা এলাকায়।
শুক্রবার আসামিদেরকে কিশোরগঞ্জ আদালতে চালান দেওয়া হয় এবং একইসাথে প্রেমিকাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, প্রেমিক পলাশের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় ওই প্রেমিকা নারীর। বৃহস্পতিবার তারা নিজেদের মধ্য ফোনে যোগাযোগ করে প্রথমে ভৈরবের মানিকদি এলাকার একটি সেতু সংলগ্ন রেস্টুরেন্টে আড্ডা কথাবার্তা হয়। পরে বিকালের দিকে তারা দুজন মেঘনা নদীর পাড়ে ঘুরতে আসে। এ সময় সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলে নদীর পাড়ের একটি জঙ্গলের ঝোপে প্রেমিক পলাশ দাস প্রেমিকা ওই নারীকে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি দেখে ফেলে ওই এলাকায় অবস্থানরত কয়েকজন ছিনতাইকারী। এ সময় দুজনকে আটক করে দুটি মোবাইলসহ তাদের টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। ঘটনার সুযোগ বুঝে ছিনতাইকারীরা জোর করে ওই নারীকে ধর্ষণ করে। ঘটনার সময় তার সাথের সহযোগী ছিনতাইকারীরা তাকে সহযোগিতা করে। এ সময় নারীর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন জড়ো হয়। পরে জনতা পুলিশকে খবর দিলে তৎক্ষণাৎ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে নারীসহ ৮ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
পরে ওই নারী পুলিশের সামনে ধর্ষণকারী নির্জনকে চিহ্নিত করে অভিযুক্ত করলেও প্রেমিকার ধর্ষণের কথা প্রথমে অস্বীকার করে তাকে অভিযোগ থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করে। এরপর অন্য আসামিদের স্বাক্ষীতে প্রমাণ হয় প্রেমিক পলাশ তাকে ধর্ষণ করেছে। তারপর নারী স্বীকার করে দুজনই তাকে ধর্ষণ করেছে।
খবর পেয়ে নারীর বাবাসহ অভিভাবকরা এবং প্রেমিকের অভিভাবকরা রাত ১০টায় থানায় এসে তদবির করলেও পুলিশ কাউকে ছাড়েনি। পরে রাত ১২টায় প্রেমিক নারীর বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করে। মামলায় ধর্ষণের অভিযুক্ত করা হয় দুজনকে এবং সহযোগী হিসেবে অপর ৬ জনকে অপরাধের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ করা হয়।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম জানান, ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্রধরে মেঘনা পাড়ে ঘুরতে এসে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় কয়েকজন ছিনতাইকারী জড়িত রয়েছে। এ ব্যাপারে নারীর বাবা বাদী হয়ে রাতেই থানায় একটি মামলা করে। তাকে শুক্রবার সকালে ডাক্তারি পরীক্ষা করতে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং আসামিদেরকে কিশোরগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে। ডাক্তারের রিপোর্ট পাওয়ার পর আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে।
ইএইচ