চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে পেশাগত দায়িত্বপালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে রাতের আধাঁরে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন মো. জাকির হোসেন (৪৫) নামে এক সাংবাদিক।
শনিবার রাতে উপজেলার ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের কালির বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় ওই সাংবাদিককে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আব্দুল করিম (৪০) নামে এক কথিত চিকিৎসককে অভিযুক্ত করে ফরিদগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেছেন হামলার শিকার সাংবাদিক।
সহকর্মীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ফরিদগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
হামলার শিকার সাংবাদিক জাকির হোসেন ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সদস্য, জাতীয় দৈনিক ঢাকার ডাক ও চাঁদপুর থেকে নিয়মিত প্রকাশিত দৈনিক চাঁদপুর সময় পত্রিকার ফরিদগঞ্জ উপজেলা সংবাদদাতা।
সরেজমিনে জানা যায়, কালির বাজারে অভিযুক্ত আব্দুল করিম সেবা ফার্মেসি নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার আড়াঁলে সরকারি বিধিবিধানের তোয়াক্কা না নিজেকে ও তার স্ত্রীকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে রোগী দেখা, প্রতিসূতিদের ডেলিভারি ও ডায়াগনস্টিক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।
বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হলে সম্প্রতি ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আব্দুল করিমকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়া হয়। তথ্য পেয়ে বিভিন্ন সাংবাদিকরা জনস্বার্থে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নিউজটি সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কথিত চিকিৎসক আব্দুল করিম শনিবার রাতে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক সাংবাদিক জাকির হোসেনের পথ রোধ করে তাকে মারধর করে নগদ টাকা হাতঘড়িসহ পেশাগত কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয়রা আহতবস্থায় আব্দুল করিমের কাছ থেকে সাংবাদিক জাকির হোসেনকে উদ্ধার করে।
হামলার শিকার সাংবাদিক জাকির হোসেন বলেন, আমি প্রতিদিনের ন্যায় পেশাগত দায়িত্বপালন শেষে বাড়িতে যাওয়ার পথে আমার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে আব্দুল করিম আমার ওপর হামলা করে। এ সময় আমার নগদ টাকা হাতঘড়িসহ পেশাগত কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও কালির বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার সামনেই সাংবাদিক জাকির হোসেনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমি ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করি। একজন সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা দুঃখজনক।
এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আব্দুল করিম পলাতক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযুক্তকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এদিকে সহকর্মীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমকে মানিক পাঠানসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
ইএইচ