ঘুর্নিঝড় রেমাল

বিষখালী নদীগর্ভে ঘর-বাড়ি বিলীন, হাজারো পরিবার নিঃস্ব

পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি: প্রকাশিত: মে ২৯, ২০২৪, ০৯:৪৫ এএম

ঘূর্ণিঝড়‌ রেমালের প্রভাবে বরগুনার পাথরঘাটায় নিঃস্ব হল হাজারো পরিবার। এর মধ্যে বিষখালী নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে মসজিদ সহ আটটি ঘর। এসব পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনদের ও রাস্তার পাশে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

এছাড়া, বন্যাকবলিত জেলা উপকূলীয় বরগুনায় ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১২ কিলোমিটার বাঁধ আংশিক ও সম্পূর্ণ। নতুন করে অনেক এলাকায় বাঁধ ভেঙে বন্যার পানি গ্রামগুলোতে ঢুকে পড়েছে। অনেক এলাকায় বাঁধ দুর্বল হয়ে যাওয়ায় তৈরি হয়েছে মানুষের আতঙ্ক।

সড়কে গাছ পরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের দুর্গম এলাকার জিনতলা এলাকায় মঙ্গলবার বিকেলে সাড়ে পাঁচটায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ১’শ ফুট নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে । এর মধ্যে হারিয়ে গেছে একটি মসজিদ ও সাতটি ঘরবাড়ি। নদীতে নেমে হারিয়ে যাওয়া ঘরবাড়ির মালামাল খুঁজছে পরিবারের সদস্যরা।

এসময় সোহরাব খান জানান, ঝড়ের গতি বেড়ে যাওয়ায় রবিবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যাই। সোমবার সকালে বাড়িতে ফিরে দেখি সবকিছু নদীর মাঝে চলে গেছে। পরনের কাপড় ছাড়া কিছুই রক্ষা করতে পারিনি। এখন পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছি।

নদীতে মাছ শিকারের গিয়ে নিখোঁজ হওয়া এক জেলের বিধবা স্ত্রী তারা বানু জানান, বন্যা শুরু হওয়ার আগে ঘরের মালামাল সরানো সময় তার ছেলে আহত হয়। আহত ছেলেকে নিয়ে রবিবার রাতে হাসপাতালে থাকি। সোমবার দুপুরে বাড়িতে ফিরে দেখি কিছুই নেই।

এছাড়া রাসেল, মানিক, জাবেরখান, আব্দুল্লাহ, ও ইউনুস মিয়ার বাড়িসহ একটি মসজিদ নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। জোয়ারের পানিতে এ এলাকার শতাধিক ঘরবাড়ির পোতা ধুয়ে নিয়ে গেছে। এদের শুধু ঘরটি দাঁড়িয়ে আছে। এ এলাকার মানুষ দু’দিন ধরে শুকনো খাবার খেয়ে কোন মতে বেঁচে আছে বলে জানা গেছে।

এদিকে পাথরঘাটার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরা জানান, যাদের ঘরবাড়ি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে তাদের পুনর্বাসনের জন্য অতিশীঘ্রই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। যাতে করে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারে।

সাংসদ সুলতানা নাদিরা আরো জানান, বিষখালী ও বলেশ্বর নদী বেষ্টিত পাথরঘাটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও দুর্গত এলাকা। এ এলাকায় স্থায়ী বেড়িবাঁধের জন্য পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও ক্ষয়ক্ষতি নিরসনের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আবহাওয়া ভালো হলেই তারা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করবেন বলে জানান তিনি।

বিআরইউ