জরাজীর্ণ টিনশেড ভবনে চলছে পাঠদান

লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ৩০, ২০২৪, ০৩:৫৬ পিএম

ভোলার লালমোহন উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের বাংলা বাজার এলাকায় ১৯৮৪ সালে স্থানীয় শিক্ষা অনুরাগী মাওলানা সাইদুল ইসলামসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মিলে প্রতিষ্ঠিত করেন বাংলা বাজার মাহমুদিয়া দাখিল মাদরাসা। মাদরাসাটি ১৯৮৭ সালে এমপিওভুক্ত করা হয়।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাদরাসাটির টিনশেড ঘরে তখন থেকে অদ্যাবধি চলছে শিক্ষাকার্যক্রম। প্রায় প্রতিবছরই বিভিন্ন ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মাদরাসার বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষ। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হলে শিক্ষকরা তাদের নিজস্ব উদ্যোগে প্রতিবছরই মেরামত করছেন শ্রেণিক্ষগুলো। গত ১০ বছর ধরে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে শিক্ষক মিলনায়তনসহ শ্রেণিকক্ষগুলো।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে বর্তমানে কয়েকটি শ্রেণিকক্ষ পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। কয়েকটি শ্রেণিকক্ষের উপরের টিন ঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে গেছে। বর্তমানে বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে ভিজে যায় পাঠদান কক্ষসহ ছাত্রছাত্রীরা। সেই সাথে বই-খাতা নিয়ে বিপাকে পড়ে শিক্ষার্থীরা।

মাদরাসার প্রধান মাওলানা মো. মতিউল ইসলাম জানান, মাদরাসায় প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বর্তমানে ৫৩০ জন শিক্ষার্থী থাকলেও প্রতিদিন প্রায় ৩৫০ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। এসব শিক্ষার্থী বছরের পর বছর চরম দুর্ভোগ নিয়ে লেখাপড়া করছে এ প্রতিষ্ঠানে। প্রতিবছর মাদরাসা থেকে শিক্ষার্থীরা জেডিসি ও দাখিল পরীক্ষা দিচ্ছে। পরীক্ষার রেজাল্ট সন্তোষজনক। ১৯৮৪ সালে মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রায় ৪০ বছর পেরিয়ে গেলেও সেই জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরেই এখন পর্যন্ত চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।

অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাওয়া, সালেহা ও নুপুর জানায়, প্রচণ্ড সূর্যের তাপে সকাল ১০টা থেকে বিকাল পর্যন্ত টিনের চালা গরম হয়ে আমরা প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়ি। বৃষ্টি হলেই টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ে ভিজে যায় বই-খাতা। তখন শ্রেণিকক্ষের মধ্যে বসে থাকাও অনেক কষ্টকর ব্যাপার হয়ে পড়ে। আমরা দ্রুত মাদরাসার জন্য একটি পাকা ভবনের দাবি জানাচ্ছি।

মাদরাসার সুপার মাওলানা মতিউল ইসলাম বলেন বলেন, মাদরাসার টিনের ঘরগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে চরম দুর্ভোগে রয়েছি। এতে করে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান ও অফিসের কার্যক্রম। বর্ষাও সামান্য ঝড় হলেই আতঙ্কে থাকি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বারবার সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করেও কোনো কাজ হয়নি।

এ ব্যাপারে উপজেলা অ্যাকাডেমিক সুপার ভাইজার মদন মোহন মন্ডল বলেন, উপজেলার অন্যান্য মাদরাসার তুলনায় বাংলা বাজার মাহমুদিয়া দাখিল মাদরাসায় শিক্ষার্থী অনেক বেশি। পড়ালেখার মানও অনেক ভালো। পরীক্ষার রেজাল্ট সন্তোষজনক। মাদরাসাটির জন্য জরুরি ভিত্তিতে একটি পাকা ভবন দরকার। বর্তমানে উপজেলায় কিছু মাদরাসায় পাকাভবনের কার্যক্রম চলমান আছে। এই মাদরাসার ভবনের জন্য অপেক্ষমাণ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে। আশা করছি, বাংলাবাজার মাহমুদিয়া দাখিল মাদরাসার জন্য শিগগিরই নতুন একটি পাকা ভবন সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে বরাদ্দ দেয়া হবে।

ইএইচ