টাঙ্গাইলের নাগরপুরে জমে উঠেছে মৌসুমী ফল তালের শাঁস বিক্রির ধুম।
উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায়, সরকারি কলেজ গেইট, নাগরপুর বাজারের বিভিন্ন মোড়ে প্রতিদিন কাঁচা তাল নিয়ে বসেছেন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা।
কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও ওই মৌসুমী ফল বিক্রিতে মেতে উঠে আর ক্রেতারা পায় নতুন স্বাদ।
প্রতি পিস তালের শাঁস (কাঁচা তাল) বিক্রি হচ্ছে দশ টাকা, তিন পিস নিলে ২০ টাকা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে প্রায় তিন হাজার তাল গাছ রয়েছে।
তালে কুশ বা শাঁস অন্যতম ভিন্নধর্মী রসালো ফল তালের আঁটি নামে বেশি পরিচিত। নরম সাদা অংশটি খুবই সুস্বাদু। গ্রাম্য ভাষায় এটি ‘তালকুশ’ বা তালের আঁটি বলা হয়। প্রচুর গরমে তালের এই শাঁসটি শহর ও গ্রামের মানুষের কাছে দিন দিন খুবই প্রিয় হয়ে উঠছে।
উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় তালগাছগুলোতে কচি তালে ভরে গেছে। কৃষকদের গাছের তালের শাঁস যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। শিশুসহ সব বয়সী লোকের মধ্যে এই তালের শাঁসের কদর দিন দিন বেড়েই চলেছে।
তালশাঁস বিক্রেতা গয়হাটা ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. আ. রহমান বলেন- দশ বছর ধরে এ পেশায় নিয়োজিত। স্ত্রী ও দুই ছেলে সন্তান নিয়েই সংসার। প্রতি বছরই এ সময়ে তালের শাঁস বিক্রি করে সংসার চালাই। গ্রাম অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে তাল কিনে গাছ থেকে পেরে এনে শাঁস বিক্রি করেন।
তবে গাছে ওঠে, বাঁধা ধরে পাড়া সবচেয়ে কষ্টকর। জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলবে তালের শাঁস বিক্রির কাজ। প্রতিদিন প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ পিস শাঁস বিক্রি করা যায়। একটি শাঁস পাঁচ থেকে দশ টাকা দরে বিক্রি করছি (আকার অনুযায়ী)। এতে দিনে প্রায় ছয় থেকে সাত’শ টাকা লাভ হয়।
মুকতাদির হোমিও চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক ডা. এম.এ.মান্নান তালশাঁসের পুষ্টি গুণাগুণ সম্পর্কে বলেন, তালের শাঁস শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। গরমের দিনে তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানি শূন্যতা দূর করে। এছাড়া ভিটামিন, মিনারেল, জিংকসহ নানা ধরনের ভিটামিন আছে। তালে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। তালে শাঁস ডায়বেটিকস্ রোগীদের জন্য ক্ষতিকর নয় বলেও জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসাইন বলেন, উপজেলার বিভিন্ন সড়কে ও কৃষি জমিতে বজ্রপাত প্রতিরোধে ও মাটির ক্ষয়রোধে তালের বীজ ইতিপূর্বে রোপণ করা হয়েছে। তালগাছ রোপণ এবং পরিচর্যায় কৃষকের সার্বিক সহযোগিতায় উপজেলা কৃষি অফিস কৃষকদের পাশে আছেন।
ইএইচ