মধুপুরে নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ

মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৪, ০২:৩০ পিএম

টাঙ্গাইলের মধুপুরে ১ম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়ে শপথ গ্রহণের পর মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদের দায়িত্ব গ্রহণ করলেন নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. ইয়াকুব আলী।

এছাড়াও দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, ভাইস চেয়ারম্যান সজীব আহমেদ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা রুবি।

এ সময় তাদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.জুবায়ের হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকির হোসাইন, পৌরসভার মেয়র আলহাজ মো. সিদ্দিক হোসেন খান, মির্জাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাদিকুল ইসলাম সাদিক, মহিষমারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহির উদ্দিনসহ আরও অন্যান্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

মোহাম্মদ অ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলী এমএ ডাবল, এলএলবি পাশ করেও জনগণের সেবার লক্ষ্যে এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ করে গেছেন। তিনি শোলাকুড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং আনন্দ মোহন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাথেও যুক্ত ছিলেন। তিনি মাত্র ২৫ বছর বয়সে বৃহত্তর অরণখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যা বর্তমানে চারটি ইউনিয়নে বিভক্ত হয়েছে।

তার সাংগঠনিক যোগ্যতা ও মেধার কারণে পরবর্তী বছরেই মাত্র ২৬ বছর বয়সে মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্যপদ লাভ করেন। এরপর তাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি পর্যায়ক্রমে তিনি অবিভক্ত মধুপুর-ধনবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত হন।

১৯৯৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করে আসছেন।

তিনি ডাবল এমএ, এলএলবি পাশ করেও আইনি পেশায় না গিয়ে পাহাড়ি অঞ্চলের অজপাড়াগাঁয়ের ছেলে মেয়েদের উচ্চ শিক্ষাদানের লক্ষ্যে শোলাকুড়ি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব নেন।
শিক্ষকতার পাশাপাশি শোলাকুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তিন তিনবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

শোলাকুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দ্বায়িত্ব গ্রহণের পর তার বড় চ্যালেঞ্জ ছিল জনবিচ্ছিন্ন শোলাকুড়ি থেকে দোখলা রাস্তা পাকা করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা। সেই রাস্তা উন্নয়নে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় বন বিভাগ, কারণ বনের রাস্তা পাকা হলে বনের গাছ চুরি রোধ করা যাবে না। বনের গাছ চুরি হবে না এমন দায়ভার নিজের উপর নিয়ে অঙ্গীকার নামা দিয়ে তিনি রাস্তা পাকা করণের কাজ শুরু করেন।

আজ অবহেলিত শোলাকুড়ির মানুষ বাসে করে শহরে যাচ্ছে। ছেলে মেয়েরা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। তিনি ইতোমধ্যে নিজ উদ্যোগে আরও কয়েকটি স্কুল গড়ে তুলেছেন।

এরমধ্যে কালিয়াকুড়ি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। শোলাকুড়ি ইউনিয়নটি মধুপুর উপজেলার শেষ প্রান্তে থাকায় ছেলে-মেয়েরা এসএসসি পাস করে কলেজে পড়ালেখা করতে চাইলে যেতে হয় ৪০-৪৫ কিলোমিটার দূরে। এছাড়া পাহাড়ি এলাকার স্বল্পআয়ের মানুষেরা সে ব্যয়ভার বহনও করতে পারেন না। তাদের কথা ভেবে তিনি নিজেই গড়ে তুললেন একটি কলেজ।

এক বিশাল আদিবাসী গোষ্ঠী তার এলাকায় রয়েছে, তাদের সংস্কৃতি রক্ষায়, জীবনমান উন্নয়নে এবং জাতিগত সংঘাত রোধে তিনি এক অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন, যার ফলশ্রুতিতে দলমত নির্বিশেষে প্রায় ৭৪ হাজার মানুষের ভালোবাসায় আজ তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে অধিষ্ঠিত হতে পেরেছেন।

ইএইচ