চৌগাছায় কোরবানির বাজার ধরতে গরু খামারিরা ব্যস্ত

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি: প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৪, ০৫:০৮ পিএম

কোরবানি ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। যশোরের চৌগাছায় এ কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজা করছেন তারা। তবে বাকি কয়দিন ভারত থেকে গরু না আসলে এবার উপজেলার খামারিরা লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।

কোরবানির বাজার ধরার জন্য ও ভালো দামের আশায় খামারিরা এসব পশু নিবিড় ভাবে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডাঃ মাহফুজুর রহমান বলেন, এবারের কোরবানির জন্য ২ হাজার ৬৫১টি বাণিজ্যিক খামারে গরু ও ছাগল পালন করা হচ্ছে। এ ছাড়াও পারিবারিক ভাবে পশু পালন করে ৮ হাজার ৩৭৫টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গত বছর থেকে এ বছর উপজেলায় কোরবানির পশু পালন বেশি হয়েছে, যা এ উপজেলায় কোরবানির পশু ৬ হাজার ৮৫২ টির চাহিদা মিটিয়ে ৩ হাজার ৯২৩টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। এসব পশু এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন বড়-বড় শহরের হাটবাজারে সরবরাহ করা হবে। 
উপজেলার মশিউরনগর গ্রামের খামার মালিক আলাউদ্দীন আলা মাষ্টার বলেন, আমার খামারে ৩৬টি গরু এবার কোরবানিতে বিক্রি করারজন্য প্রস্তুত করেছি। গরুর দাম ভালো থাকলেও গো-খাদ্যে ও শ্রমিকের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে গরু পালনে অন্যবারের চাইতে এ বছর খরচ অনেক বেশী হয়েছে। কোরবানী ঈদের বাকী যে কয় দিন আছে সরকারি ভাবে ভারত থেকে গরু আনা বন্ধ করতে না পারলে দেশীয় খামারিদের ব্যাপক লোকসানে পড়তে হবে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তিনি গরু মোটাতাজাকরণে ব্যাপক সফল। তার সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই এখন অন্য পেশা ছেড়ে গরু মোটাতাজাকরণ কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছেন। কোনো প্রকার ক্ষতিকর ভিটামিন কিংবা স্টেরোয়েড ছাড়াই লালন পালনকৃত এসব গরু ভালো দামে বিক্রিও হবে। তিনি খামার পরিচালনায় প্রতিদিন নিজের শ্রমের পাশাপাশি মাসিক বেতনের দুজন শ্রমিকও রেখেছেন। তবে এ বছর বাইরে থেকে বড় বড় ব্যাপারীরা এখনো আসেনী।

একই গ্রামের খামার মালিক সাইদুল ইসলাম বলেন, আমার খামারে ২০টি গরু এবার কোরবানিতে বিক্রি করার জন্য প্রস্তুত করেছি। এসব পশু লালন-পালনে কোনো প্রকার স্টেরোয়েড ব্যবহার করা হয়নি। শুধুমাত্র বিচলী (ধানের কুড়া), খৈল, গমের ভুসি ও সবুজ ঘাস ইত্যাদি খাওয়ানো হয়েছে। গরুর জন্য ১ বিঘা জমিতে তিনি নেপিয়ার ঘাস চাষ করছেন। গরুগুলো বিক্রি করে তিনি এবারের কোরবানিতে পাঁচ-ছয় লাখ টাকা লাভের আশা করেছেন।

সিংহঝুলী গ্রামের ছাগল ও ভেড়া খামারি নাকিব খান বলেন, এ বছর ছাগল ও ভেড়া পালনে ব্যাপক ভাবে ব্যায় বেড়ে গেছে। তাই ছাগল ও ভেড়ার বাজার মূল্য একটু বেশি না হলে খামারিদের লোকসানে পড়তে হবে।

উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আনোয়ারুল কবির বলেন, আমরা গরু-ছাগল খামারিদেরকে দেশীও খাবার খাওয়ায়ে মোটাতাজাকরণে ট্রেনিং দিয়েছি। যাতে তারা ট্রেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহার না করেন। বড় খামারি হিসেবে আলাউদ্দীন মাষ্টার সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরো বড় পরিসরে খামার গড়ে স্থানীয় ভাবে বেকারত্ব দূরীকরণে কার্যকর ভূমিকা রাখবেন। তিনি পেশাইয় একজন শিক্ষক ও অনুপ্রেরণা সৃষ্টিকারী উদ্যোক্তাও বটে। তাই প্রাণিসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে সর্বদাই তাকে প্রয়োজনীয় সেবা দেয়া হয়। গত বছরের চেয়ে এবার কোরবানির পশু রয়েছে বেশি, যা এ উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে খামারিরা দেশের রাজধানী ঢাকা শহরসহ অন্যান্য বড়-বড় শহরে বিক্রি করতে পারবেন।

বিআরইউ