নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণ

মেলান্দহ (জামালপুর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২৪, ০৪:১০ পিএম

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নে একটি সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

চুক্তিপত্র অনুযায়ী সড়কটি পাকাকরণের কাজ পেয়েছে মেসার্স বাংলাদেশ বিল্ডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে কাজটি ঝাউগড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম রুশোর কাছে বিক্রি করে দিয়েছে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করা হয়নি দাবি ওই আওয়ামী লীগ নেতার। সড়ক পাকা করার কাজটি একেবারেই নিম্নমানের ও দায়সারাভাবে করা হচ্ছে। সবাই দেখেও কেউ কিছু বলছে না বলে জানান স্থানীয় এলাকাবাসী।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পশ্চিম ঝাউগড়া মেইন রোড় থেকে কিফায়াত শেখের বাড়ি পর্যন্ত ৫০০ মিটার সড়ক পাকা করার কাজ চলছে। এই সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করছেন ঠিকাদার। সেই খোয়া হাত দিয়ে ধরলেই ভেঙে যায়। ঠিকাদার প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ কোনও কথা বলতে সাহস পায় না। সড়কে কাজ আরও খারাপ করলেও স্থানীয় লোকজন কেউ কোনও কথা বলবে না।

উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ঝাউগড়া ইউনিয়নের পশ্চিম ঝাউগড়া পইরবাড়ি জিপিএস থেকে কিফায়াত শেখের বাড়ি পর্যন্ত ৫০০ মিটার সড়ক পাকাকরণের কাজ শুরু হয়েছে। ওই কাজে ৭০ লাখ ৫৪ হাজার ৮৫৪ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। দরপত্রের মাধ্যমে ২ মার্চ মেসার্স বাংলাদেশ বিল্ডার্সকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। তবে সড়ক পাকাকরণের কাজটি ঝাউগড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম রুশো কাছে বিক্রি করে দিয়েছে মেসার্স বাংলাদেশ বিল্ডার্স নামে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজটি শেষ করার জন্য চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ৫০০ মিটার সড়ক নির্মাণের কাজে বালি ভরাটের কাজ শেষ হয়েছে। এখন সড়কের সাববেজের (নিচের স্তর) কাজ চলছে। সড়কের পাশের মাটি ভরাটও করা হয়েছে। পুরো সাববেজের জন্য ব্যবহৃত করা হয়েছে নিম্নমানের ইটের খোয়া। স্থানীয়ভাবে যা রাবিশ বলে পরিচিত। ইটের গুঁড়ামিশ্রিত ব্যবহার অযোগ্য ইটের খোয়া রাস্তায় বিছানো হয়েছে। এর ওপর বালু দিয়ে ঢেকে দেওয়া হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, নিম্নমানের খোয়া দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। আরও যদি নিম্নমানের কাজ হয় তাও স্থানীয়রা কিছু বলতে পারবে না। উপজেলা এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করে থাকে।

জানতে চাইলে মেসার্স বাংলাদেশ বিল্ডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. আতিকুর রহমান আতিক বলেন, ‘কাজটি আমি বিক্রি করে দিয়েছি। যিনি কাজ করছেন তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা। কাজের মান নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলব। সঠিকভাবে কাজ করতে বলে দেব।

এ বিষয়ে সড়ক পাকাকরণ কাজের ঠিকাদার ও আওয়ামী নেতা মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম রুশো বলেন, রাস্তায় কোনও ধরনের নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করা হয়নি। নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগটি মিথ্যা।

এ বিষয়ে জামালপুরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী (এলজিইডি) উজ্জ্বল ত্রিপুরা বলেন, বিষটা আমার নলেজে আছে। কাজটি দেখার জন্য টিম করে দেওয়া হয়েছে। তারা কাজটি দেখবেন।

ইএইচ