সাদুল্লাপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে ৪ শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত

সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ১১, ২০২৪, ০৬:৫৯ পিএম

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার জামালপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থীকে ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটেছে।

প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ছাত্রী জান্নাতী আকতার ফাতেমা (২১) নামের নারী হঠাৎ করে বিদ্যালয়ে ঢুকে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটায়। আহতদের মধ্যে তিন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিদ্যালয় চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।

হাসপাতালে ভর্তি তিন শিক্ষার্থী হলেন, সেতু খাতুন, মিতু আক্তার ও রাবেয়া খাতুন। তারা তিনজনেই ওই বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। এরমধ্যে ছুরির আঘাতে সেতুর বাম হাত, মিতুর পিঠ ও রাবেয়ার দুই পা ও মাথায় জখম হয়। সীমা আক্তার নামের আরেক  আহত শিক্ষার্থীকে  প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, এ ঘটনার পর অভিযুক্ত জান্নাতি আক্তার ফাতেমাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। এই নারী সাদুল্লাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের গয়েশপুর গ্রামের ফুল মিয়ার মেয়ে ও ইসবপুর গ্রামের আশিক মিয়ার স্ত্রী বলে জানা যায়।

প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকরা জানান, প্রতিদিনের মতো বিদ্যালয়ে মেয়েদের ক্লাস চলছিল। ক্লাস চলার ফাঁকে কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের বারান্দা বসে গল্প করছিলো। এ সময় হঠাৎ করে জান্নাতি আক্তার বিদ্যালয়ে ঢুকে তার হাতে থাকা ধারালো একটি ছুরি দিয়ে শিক্ষার্থীদের এলোপাতাড়ি আঘাত করে। পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অন্য শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা এগিয়ে এসে ওই নারীকে আটক করে। স্থানীয়রা কেউ কেউ ওই নারীকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি করেছেন।

এ বিষয়ে জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রনজু মিয়া বলেন, জান্নাতি আক্তার আমার এলাকার সন্তান। সে একজন মানসিক রোগী। দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। সে প্রায় দেড় বছর আগে বিয়ে করেন। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলার কারণে জান্নাতি বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন।

জামালপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আনজারুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে জান্নাতি নামের মেয়েটি হঠাৎ করে প্রতিষ্ঠানে ঢুকে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করেছে।

ঘটনার খবর শোনার সাথে সাথে আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপস্থিত হন উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাওছার হাবিব, জেলা শিক্ষা অফিসার রোকসানা বেগম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবুল হোসেন

এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাওছার হাবিব বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি তাদের উন্নত চিকিৎসা চলছে।

এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহীনুর ইসলাম মন্ডল  বলেন, ঘটনায় শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে তাদের উন্নত চিকিৎসা চলছে। আপাতত গুরুতর কোন সমস্যা নেই।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত ওই নারীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ সময় তার কাছে একটি দেশীয় ধারালো ছুরি (চাকু) উদ্ধার করা হয়। তবে কেন কী কারণে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন তা জানতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলছে।

ইএইচ