কোম্পানীগঞ্জে বন্যায় থমকে গেছে জনজীবন

তারিকুল ইসলাম, কোম্পানীগঞ্জ (সিলেট) থেকে প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২৪, ০৭:২৬ পিএম

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর, ঘোড়ামাড়া, তৈমুরনগরের জন্য ফ্লাড সেল্টার সেন্টার না থাকায় অসহনীয় জনদুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হয়েছে ১৫-১৬ হাজার মানুষকে।

বন্যাকালীন সময়ে নিকটস্থ আঞ্চলিক মহাসড়ক ছাড়া অন্য কোথাও আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ নেই ঘনবসতিপূর্ণ এ গ্রামের মানুষদের। বাধ্য হয়েই খোলা আকাশের নিচে তাঁবু টাঙিয়ে মানুষ ও গবাদিপশুদের আশ্রয় নিতে হয়। ভৌগলিক দিক দিয়ে তিনটি গ্রামের মানুষজন একে অন্যের সাথে সম্প্রতি নজির রয়েছে। বন্যা আক্রান্ত হলেও তিনটি গ্রামের মানুষ পার্শ্ববর্তী টুকেরবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কিংবা পাড়ুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত স্থান না থাকায় আশ্রয় নিতে অনীহা।

শুধু তাই নয়, আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষজন বন্যাকালীন সময়ে কোনো ত্রাণ সুবিধার আওতায় আসে না। যার ফলে এ তিনটি গ্রামের মানুষজন প্রতি বছর অতি বন্যায় প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করে আসলেও ভাগ্য বিধাতা প্রতিবছরই যেন তাদের বিপক্ষে।

গত ২০২২ এর ভয়াবহ বন্যায় এ তিনটি গ্রামের হাজারের অধিক পরিবার তিন রাত্রি খোলা আকাশের নিচে ছাতা মাথায় দিয়ে রাত কাটাতে হয়েছে। চরম এ দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে দ্রুত একটি ফ্লাড সেল্টার সেন্টারের দাবি জানান সুশীল সমাজ।

ইউনিয়নে ৮ ফ্লাড সেল্টার সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে ৩টি ফ্লাড সেল্টার সেন্টার উপজেলা সদরের অর্ধ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। ইউনিয়নের সবচেয়ে বেশি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা বৃহত্তর টুকের বাজার। বিশাল এ ঘনবসতিপূর্ণ এ এলাকায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষের বসবাস। অথচ সংখ্যাধিক্য মানুষের জন্য মাত্র একটি ফ্লাড সেল্টার সেন্টার। যা জনসংখ্যায় ও আশ্রিত চাওয়া বন্যার্তদের জন্য অপ্রতুল।

হাসান মিয়া নামে একজন ষাটোর্ধ্ব জানান, ঘরে কোমর পানি। কোথাও আশ্রয় পায়নি। মহিলা ও শিশুদের একটি গ্যারেজে রেখে আমি রাস্তায় রাস্তায় রাত কাটাচ্ছি। নেই সরকারি খাদ্য।

এমসি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আপন তাহসান জানান, বন্যায় এ এলাকার মানুষদের এ গ্রাম ও গ্রামে ছোটাছুটি করতে হয়। মাঝারি বন্যায় হাজারের অধিক বসতঘর পানিতে অর্ধনিমজ্জিত হয়ে যায়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী জানান, একটি ফ্লাড সেল্টার সেন্টার খুবই জরুরি। উপজেলার সবচেয়ে বেশি মানুষের বসবাস এ ইউনিয়নে। অথচ মাত্র ৮ টি ফ্লাড সেল্টার সেন্টার রয়েছে ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নে, যা আশ্রিত মানুষের জন্য অপ্রতুল্য। ফ্লাড সেল্টার সেন্টারে মানুষ আশ্রয় নিলেও পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা পাচ্ছে না।

১নং ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ জানান, ৮টি ফ্লাড সেল্টার সেন্টারে আশ্রিত ৩ শত পরিবারের জন্য ১১ বস্তা চিড়া ও ২৮০ পিস গুড় এবং ৫ টন চাউল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অথচ সেন্টারগুলোতে প্রায় ৬ শত পরিবার রয়েছে। ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার পরিবার বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।

ইএইচ