অবশেষে কেটে ফেলা হলো আলোচিত সেই ‘কথা বলা’ গাছ

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৪, ০৮:১৬ পিএম

অবশেষে প্রশাসনের উপস্থিতিতে কেটে ফেলা হলো গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার আলোচিত সেই ‘কথা বলা’ গাছটি। এতে অবসান হলো প্রতারণা করে টাকা কামানোর অপচেষ্টা।

আজ শনিবার দুপুরে মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদী ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান টুটুলের উপস্থিতে এ গাছটি কেটে ফেলে স্থানীয় জনগণ।

গত বেশ কয়েকদিন ধরে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার গর্জিনা গ্রাম। ওই গ্রামের সৌদি প্রবাসী সবুর মিয়ার বাগানের একটি গাছ কথা বলছে এমন অপ্রচারের ডালপালা ছড়ায় চারিদিকে। তা এলাকা ছাড়িয়ে দেশের অন্যন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়লে দূর দূরান্ত থেকে আসতে থাকে উৎসুক মানুষ। কেউ কেউ মানতও করতে শুরু করেন। গাছের গায়ের সাথে কান পেতে কথা শোনার চেষ্টা করে থাকে সাধারণ মানুষ।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদ। গাছটি কাটার সময় ভীড় করে স্থানীয় মানুষসহ দূর দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরাও। এসময় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মুকসুদপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান, মুকসুদপুর থানার ওসি মুহাম্মদ আশরাফুল আলমসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

রাঘদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান টুটুল বলেন, ‘গত একসপ্তাহ যাবত বিভিন্ন  ভাবে বিভ্রান্তমূলক তথ্য দেয়ার কারণে দেশব্যাপী মানুষ জানছে গাছে কথা বলে। আসলে গাছে কোন কথা বলে না। গাছটি লম্বা হওয়ায় বাতাসে যখন বাধে তখন গাছে একটা শব্দ হয়। কেউ কেউ মনে করছে গাছে কথা বলছে। এটা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিমূলক। যার কারণে  সারাদেশে একটা আলোচনা সৃস্টি হয়েছে। প্রশাসনসহ এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে আমরা গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেই। এটা একটা অযৌতিক ও কুসংস্কার। ধর্মীয় রীতিনীতির বাইরে। এই কুসংস্কার আমরা পছন্দ করি না। আলেমরাও বিশ্বাস করে না। এব্যাপারে গাছের মালিকের সঙ্গে কথা বলে তাকে বুঝানো হয়েছে। সে বিষয়টি বুঝতে পেরেছে। মালিকও চায় না এখানে এত জনসমাগম হোক, তাই গাছটি কাটা হয়েছে।’

মুকসুদপুর থানা ওসি মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ‘স্থানীয় চেয়ারম্যান গ্রামবাসীর সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে গাছটি কেটে দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলার যাতে অবনতি না হয় সেজন্য আমারা উপস্থিত ছিলাম।’

গোপালগঞ্জ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের  প্রধান শুকলাল বিশ্বাস বলেন, ‘এটা একটি গুজব। উদ্ভিদের প্রাণ আছে, কোষ আছে কিন্তু কথা বলার মত কোন ভোকাল সিস্টেম বা স্বরযন্ত্র না থাকায় কথা বলার কোন সুযোগ নেই। তবে বাতাসের কারণে বিভিন্ন ধরনের শব্দ হতে হতে পারে। শব্দ কখনও ভাষা হতে পারেনা।  তাই এটা সম্পূর্ণ গুজব ছাড়া কিছুই না।’

আরএস