বাগেরহাটে একই পরিবারের ৫ জনকে পিটিয়ে জখম

বাগেরহাট প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৪, ০৪:০০ পিএম

বাগেরহাটের শরণখোলায় পানি উন্নয়নের বোর্ডের ৭৫ শতাংশ জমি জোরপূর্বক দখল করতে প্রকৃত লিজগ্রহনকারী পরিবারের ৫ সদস্যকে বেধরক মারধর করেছেন প্রতিপক্ষরা। প্রতিপক্ষের মারধরে আহত একই পরিবারের ৫ জন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আবারও মারধরের শঙ্কায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন পরিবারের অন্য সদস্যরা। এমন অভিযোগ করেন শরণখোলা উপজেলার পূর্ব রাজৈর গ্রামের কারী আব্দুল হামিদের মেয়ে মনিয়ারা আক্তার।

তিনি বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ শরণখোলা উপজেলার আমরাগাছিয়া মৌজায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৭৫ শতক জমি লিজ নিয়ে মাছ চাষ করছেন তারা। এই মৎস্য ঘেরের মাছ বিক্রি করে তাদের সংসার চলে। দুই মাস আগে স্থানীয় প্রভাবশালী আবু গাজি ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল গাজী তাকে ঘের থেকে সরে যাওয়ার হুমকি ধামকি দেয়।

এরই ধারাবাহিকতায় হুমকি দেওয়ার কিছু দিন পর আবু গাজীর নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জনের একটি দল এসে তাদের ঘেরের নেট-পাটা তুলে ফেলে, তার ঘেরের মাছ নষ্ট করার চেষ্টা চালায়। বাঁধা দিলে গালিগালাজ করে চলে যায়।

এক পর্যায়ে শুক্রবার সকালে আবু গাজী ও রাসেল গাজীর নেতৃত্বে নূরু গাজি, সাইফুল গাজি, রিয়াদুল ইসলাম, রাজু গাজি, নাহিদ গাজি, ডালিম গাজি, সেবাহান খা, রাসেল গাজি, মজিবার ফরাজি, নেয়ামুলসহ ২৫-৩০ জন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসে ঘের ছেড়ে দিতে বলে। জোর করে জমি দখল করবে নাকি এটা বললেই, রাসেল গাজী ও তার লোকজন মনিয়ারা আক্তারের বাবাসহ পরিবারের সকলকে এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে। লাঠি দিয়ে পিটানোর পাশাপাশি ধারালো দা ও অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।

তাদের হামলায়, মনিয়ারার বাবা কারী আব্দুল হামিদ, বড় বোন হামিদা বেগম, ছোট বোন নাছিমা আক্তার, মা রহিমা বেগম, ভাবি লিপি বেগ ও লিমা বেগম গুরুতর আহত হয়। মারপিটের পরে হাসপাতালে যেতেও বাঁধা প্রদান করে হামলাকারীরা।

পরে ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ এসে আমাদের হাসপাতালে যেতে সহযোগিতা করেন। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় আহতদের মধ্যে বাবা কারী আব্দুল হামিদ, বড় বোন হামিদা বেগম, ছোট বোন নাছিমা আক্তারকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনও তারা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। মারধর করার সময় ওরা আমার ও আমার বোনের গলায় থাকা দুটি স্বর্ণের চেইন ছিড়ে নিয়ে যায়।

মনিয়ারা আক্তার আরও বলেন, এ ঘটনা শরণখোলা থানায় জানালেও কোন প্রতিকার পাইনি। পরে আদালতে মামলা দায়ের করেছি। রাসেল গাজী ও তার লোকজন এখনও আমাদের মারধরের হুমকি দিচ্ছে। জমি না ছাড়লে মেরে ফেলবে। এই অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার ভুগছি। আমরা এই হামলাকারীদের বিচার চাই।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা রাসেল গাজী বলেন, মারধরের সময় আমার দুই ভাইও আহত হয়েছে। মূলত আমাদের জমি তারা উল্টো দখল করে খেতে চায়। এজন্যই মনিয়ারা আক্তার ও তাদের লোকজনের সাথে জমি নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। আমরা মূলত সুষ্ঠু সমাধান চাই।

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে সংঘর্ষে দুই পক্ষের কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইএইচ