মাটিরাঙ্গায় অসহায় লাচ্ছি বালা এিপুরার পাশে দাঁড়ালেন ইউএনও ডেজী চত্রুবর্তী

পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২৪, ০৯:১৩ পিএম

খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার সদর ইউনিয়ন এর দূর্গম ধন্তীরামপাড়ার অসহায় মাসনিক  ভারসাম্যহীন লাচ্ছি বালা এিপুরার পাশে দাঁড়ালেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডেজী চত্রুর্বতী।

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরের দিকে  মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়ন এর দূর্গম ধন্তীরাম পাড়ার মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর ঝুপড়ি ঘরে আর্থিক সহায়তা, নিয়ে ছুটেন যান মানবিক মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডেজী চত্রুবর্তী।

এসময় মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো.ইশতিয়াক আহম্মেদ, মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেমেন্দ্র এিপুরা, মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন,মাটিরাঙ্গা প্রেস-ক্লাবের সহ-সভাপতি মো.জসীম উদ্দিন জয়নাল,প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো.মুজিবুর রহমান ভূইঁয়া উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, ষাটোর্ধ্ব বিধবা মা আর তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে লাচ্ছি বালা ত্রিপুরার সংসার। মা আর ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ভাইয়ের বাড়িতেই আশ্রিত ছিলেন এই নারী। কয়েক বছর আগে ভাই তাদেরকে বাড়ি থেকে বের করে দিলে ধন্তীরামপাড়ার পৈত্রিক জমিতে একটি ফুটো টিনের চালা দিয়ে ঝুপড়ি ঘরে বৃদ্ধ মা আর তিন ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন লাচ্ছি বালা ত্রিপুরা। কিন্তু বাসস্থান হারিয়ে লাচ্ছি বালা ত্রিপুরা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। কথা বলেন এলোমেলো। মা আড়াল হলেই দূরে কোথাও চলে যান। তাই বাধ্য হয়েই মেয়েকে শিকলে বেঁধে রেখেছেন ষাটোর্ধ্ব মা হৈমন্তী ত্রিপুরা। এভাবেই গত চার মাসের বেশি সময় ধরে শিকলে বাঁধা জীবন কাটছে লাচ্ছি বালা ত্রিপুরার।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ফুটো টিনের ঝুপড়ি ঘরের খুঁটির সঙ্গে হাতে শিকল ও তালা দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে মানসিক ভারসাম্যহীন লাচ্ছি বালা ত্রিপুরাকে। পাশেই তার নাবালক তিন সন্তানকে নিয়ে বসে আছেন বৃদ্ধা মা হৈমন্তী। মায়ের চোখে-মুখে-কপালে চিন্তার ভাঁজ। বন্দি জীবন থেকে মুক্তির জন্য শিকল ধরে টানাটানি করছেন লাচ্ছি। মাঝে মাঝেই নিজের রাগ-ক্ষোভ ঝাড়ছেন মায়ের ওপর।

মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হেমেন্দ্র ত্রিপুরা বলেন, লাচ্ছি বালা ত্রিপুরা চিকিৎসার অভাবে শিকলে বাঁধা থাকেন, তা তিনি জানতেন না। বিষয়টি জেনেই তাদের খবর নিতে ছুটে এসেছেন। লাচ্ছি বালা ত্রিপুরার চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ তাদের পুনর্বাসনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে উদ্যোগ নেবেন বলে জানান।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডেজী চক্রবর্তী বলেন, বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে জানার পর আমরা সরেজমিনে দেখলাম। আপাতত ওই পরিবারের থাকার ঘর মেরামতের জন্য দুই বান্ডিল ঢেউটিন, খাদ্য ও নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হলো। তার চিকিৎসায় ও সন্তানদের লেখাপড়া নিশ্চিত করতে সমাজসেবা অফিসারকে বলেছি। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ওই পরিবারটির পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

আরএস