সরকারি বাঁওড়ের শত একর জমি দখল করে ফসল চাষ

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৪, ০৫:৩২ পিএম

যশোরের চৌগাছায় সরকারি মর্জাদ বাঁওড়ের জমি প্রভাবশালীরা যে যার মত দখল করছেন। বাঁওড় ধারের শতশত একর জমি দখলে নিয়ে চাষ আবাদের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।

শনিবার সরেজমিনে গেলে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা বাঁওড়ের শুকনা জমি দখল করে ফসল চাষ করছেন। যেন দেখার কেউ নেই।

বাঁওড়ের শত শত একর জমি দখল করে নিচ্ছে কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। এসব সরকারি জমি দখল নিয়ে ফসল চাষ করায় গোচারণ ভূমি নষ্ট হচ্ছে। চারণভূমি নষ্ট হওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার গরু-মহিষ ও ছাগল পালনকারী সাধারণ জনগণ। এই জমি দখল প্রতিরোধে প্রশাসনের উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি বলে অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী।

এলাকাবাসী জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য হায়াতপুর গ্রামের বাসিন্দা জসিম উদ্দীন প্রথমে জমি দখল শুরু করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ ইউপি সদস্য জসিম উদ্দীনই প্রথম বাঁওড়ের জমি দখল করে ফসল চাষ করা শুরু করেন।

এরপরই বাঁওড়ের পার্শ্ববর্তী পাতিবিলা, হায়াতপুর, তেঘরি, জগদিশপুর ও হাজিপুর গ্রামের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ট্রাক্টর দিয়ে বাঁওড়ের শত শত বিঘা জমি চাষ করতে থাকেন। এ নিয়ে এলাকায় প্রতিবাদের ঝড় উঠলেও রহস্যজনক কারণে ভূমি অফিস কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

এরপর থেকেই দখল আর পাল্টা দখলে মেতে উঠেছেন এলাকার প্রভাবশালীরা। যারা জমি দখল করছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, হায়াতপুর গ্রামের জহির উদ্দীন, রাসেল হোসেন, পান্নু মিয়া, হিন্দু পাড়ার শ্রী প্রভাত ও বিজয় কুমার, পাতিবিলা গ্রামের আশারোফ হোসেন, টিটো হোসেন, ফারুখ হোসেন ও রুহুল আমিনসহ তাদের লোকজন।

সরেজমিনে গেলে চোখে পড়ে সরকারি মর্জাদ বাঁওড়ের শতশত একর জমি দখল করে করছে চাষ-আবাদ।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েকজন জানান, প্রশাসনকে জানানো হয়েছে কিন্তু কেউ এখানে আসেনি। প্রশাসন দায়সারা ভাবে এলাকায় সতর্কতামূলক মাইকিং করেছে জমি দখল না নেওয়ার জন্য। কিন্তু একদিকে মাইকিং চলছে অন্যদিকে প্রশাসনের প্রচারকে থোড়াই কেয়ার করে বাঁওড়ের জমি দখলদাররা চষে বিভিন্ন আবাদ করছে। ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা বাঁওড়ের শুকনা জমি দখল করে ঘিরে ফসল চাষ করাচ্ছেন। যেন দেখার কেউ নেই।

বাঁওড়ের জমি দখলদার ইউপি সদস্য জসিম উদ্দীন বলেন, আমি জমি চাষ করিনি। কিছু জমি দখল করেছি কেউ যেন চাষ করতে না পারে সে কারণে। বাঁওড়ের পার্শ্ববর্তী হিন্দু পাড়ার লোকজন কিছু জমি দখল করে চাষ করেছে বলে তিনি জানান। এছাড়া তার এলাকায় কেউ বাওড়ের জমি দখল করেছে কিনা তার জানা নেই।

হায়াতপুর গ্রামের বাসিন্দা জহির উদ্দীন বলেন, আমার অনেক কিছু আছে আমি কেনো বাঁওড়ের জমি দখল নিতে যাব? এলাকার কেও আমার সাথে শত্রুতা করে নাম দিয়েছে। আমি এলাকায় একটু মাত্তুব্বারি করি এতে কেউ আমার উপরে ক্ষুব্ধ থাকতে পারে।
চৌগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গুঞ্জন বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইএইচ