আমন চাষের খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে কৃষক

বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২৪, ০৩:৩৪ পিএম

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার কৃষকেরা চলতি আমন মৌসুমে ধান রোপণের খরচ যোগাতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন।

বোরো আবাদের তুলনায় আমন চাষে তেমন খরচ কম না হলেও বর্তমানে পরিপূর্ণ আবহাওয়ায় কোনো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কৃষকদের সেচের পানি কিনে জমি চাষ করতে হচ্ছে।

অপরদিকে সার ও কৃষান খরচ বাড়ায় অতিরিক্ত ব্যয় করতে হচ্ছে কৃষকদের। অতিরিক্ত উৎপাদন খরচের বোঝা মাথায় নিয়েই আমন চাষ করছেন চাষিরা।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত অনেক জমিতে পানির অভাবে অনাবাদি পড়ে রয়েছে। অনেক কৃষক সেচের পানির দাম বেশি হওয়ায় জমি চাষ করতে পারছেন না।

উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের ন্যাটাশন গ্রামের কৃষক পাথরাজ জানান, সার ও সেচের দাম বাড়ার ফলে চাষাবাদের খরচও বেড়েছে। ধানজুড়ী মিশনের অধীন গভীর নলকূপে গত ইরি-বোরো মৌসুমে প্রতি বিঘা জমিতে সেচের দাম দিতে হয়েছে বিঘা প্রতি ১৮’শ টাকা।

একই ইউনিয়নের বেলপুকুর গ্রামের কৃষক বাবু পাহান জানান, তিনি মকছেদুল ও ইউপি চেয়ারম্যানের বাবা নবিন্দ্রনাথ পাহান এবং ভাই হিতেন পাহানের নলকূপের এরিয়াতে উঁচু নীচু মিলিয়ে মোট ১৪ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেন। চলতি মৌসুমে বিঘা প্রতি সেচের জন্য অগ্রিম ১ হাজার টাকা নিয়ে পানি দিচ্ছেন নলকূপ মালিকরা। এবং পরবর্তীতে বৃষ্টি না হলে আরো ৫’শ টাকা করে দিতে হবে বলেও জানান তিনি। গত ইরি মৌসুমে নলকূপের অধীনস্থ উঁচু নীচু জমিতে ১৮’শ থেকে ২৫’শ টাকা করে আদায় করা হয়েছে।

ন্যাটাশন গ্রামের আরেক কৃষক জানান, গত ইরি-বোরো মৌসুমে বরেন্দ্র সেচ এলাকার কৃষকদের পানি নিতে বিঘা প্রতি জমির প্রকার ভেদে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার ২’শ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়েছে। এর মধ্যে অপারেটর চার্জ (হ্যান্ডেল ভাড়া) বাবদ ৮’শ করে নেওয়া হয়েছে এবং এই মৌসুমে ঘণ্টায় ২’শ টাকা করে পানি দাম নিচ্ছে।

বর্তমানে এক বিঘা জমি চাষে মোট খরচ হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার টাকা। তাতে আমন মৌসুমে ধান পাওয়া যাবে ১২-১৪ মণ। ধান কাটা মৌসুমে ধানের মূল্য থাকে ৯০০-১১০০ টাকা মণ। সে হিসাবে ধানের উৎপাদন খরচই উঠবে না। এমন অবস্থায় কৃষকের পক্ষে চাষাবাদ চালিয়ে যাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়বে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কৃষ্ণ কমল রায় জানান, এবার বিরামপুর উপজেলার পৌর এলাকা ও ৭টি ইউনিয়নে ১৭ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে আমন রোপণের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ ভাগ জমিতে আমন চারা রোপণের পর পানির অভাবে রোপণ কাজ ব্যাহত হচ্ছে। সেচ যন্ত্র চালু করে জমিতে পানি সেচ দেওয়ার জন্য বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও সেচ পাম্প মালিকদের তাগাদা দেওয়া হয়েছে।

ইএইচ