দ্বীপ জেলা ভোলায় আওয়ামী লীগের এমপি ও দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পরই এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন। বর্তমানে তাদের কোথাও কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছেনা।
এছাড়াও স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের অনেকেই আত্মরক্ষার্থে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।
চলমান এই পরিস্থিতিতে ভোলা-১ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা তোফায়েল আহমেদ, ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আযম মুকুল, ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, ভোলা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবসহ বিভিন্ন উপজেলার উপজেলা চেয়ারম্যানসহ পৌরসভার মেয়র ও জেলা-উপজেলার নেতাকর্মীরা বাড়িঘর ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন।
জানা গেছে, সারাদেশের ন্যায় ভোলা জেলায়ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে ছাত্র-জনতা, গত ৪ আগস্ট জেলা শহরে ওই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ যুবলীগের হামলার পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা ভোলা জেলার পরিবেশ।
এ সময় ডিসি অফিস, জেলা পরিষদ কার্যালয় পৌরসভা ভবন, মুক্তিযোদ্ধা অফিস ও আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর করে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়, জেলা প্রশাসক ব্যবহৃত গাড়িসহ ডিসি অফিসে পার্কিং করে রাখা মোট ১৪টি সরকারি গাড়ি এবং ৩০টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা।
এ সময় সংঘর্ষ চলাকালে মাথায় গুলি লেগে মো. জসিম উদ্দিন (৪০) নামের একজন নিহত হয়েছেন বলে জানা যায়।
এরপর আন্দোলনকারীরা পুরো জেলা শহর দখলে নেয়। এসব হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পরও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও ব্যাপক ধৈর্যের পরিচয় দেয়।
পরের দিন ৫ আগস্ট দুপুরে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর এমপি ও নেতাকর্মীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। এরপর তারা কে কোথায়, কেউ তাদের হদিস জানে না।
জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে জানা যায়, ভোলার ৪টি আসনের সাবেক এমপি বা জেলা নেতারা কে কোথায় আছেন তা কেউ জানে না। কারও সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। শুধু জেলার নেতারাই নয়, উপজেলা বা ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারাও হামলার ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন।
তবে এখনও তাদের মধ্যে অনেকেই বিদেশে যেতে না পেরে দেশেই আত্মগোপনে রয়েছেন। সুবিধামতো সময়ে অনেকে হয়তো বিদেশে পাড়ি জমাতে পারেন।
ইএইচ