দুই সপ্তাহেও গ্রেফতার হয়নি ফেনীর অস্ত্রধারীরা, ভারত পাড়ি দিচ্ছেন কেউ কেউ

ফেনী প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২৪, ০৬:১৫ পিএম

ফেনীতে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা গ্রেফতার আতঙ্কে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের আগেরদিন শহরের মহিপালে গণহত্যার ঘটনায় জনরোষ এড়াতে শুধু নেতারা নন, কর্মীরাও গা ঢাকা দিয়েছেন। ইতিমধ্যে ওই ঘটনায় ১ হাজার ৬শ ২৩ জনকে আসামি করে পৃথক ৫টি মামলা দেয়া হয়েছে।

সবকটি মামলায় জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এসব মামলার কারণে গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছেন অনেকেই। যার ফলে বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। তবে ভারত পালিয়ে যাওয়ার সময় আখাউডা ইমিগ্রেশনে তার পিএস ফরিদ মানিক গ্রেফতার হলেও অস্ত্রধারীদের কেউ এখনো গ্রেফতার হয়নি। এনিয়ে নিহতদের পরিবার ও জনমনে ক্ষোভ রয়েছে।

বিভিন্ন সূত্র জানায়, গত ৪ আগস্ট শহরের মহিপালে ছাত্র-জনতার উপর নির্বিচারে গুলি ছুঁড়ে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা। পরদিন জেলাব্যাপী নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। ৪ আগস্টে গুলিবর্ষণের ভিডিও চিত্র ভাইরাল হওয়ায় নেতাকর্মীরা গা আত্মগোপনে চলে যান। অনেকের মোবাইল ফোনও পাওয়া যাচ্ছেনা। সরকার পতনের পর নিজাম উদ্দিন হাজারীর গ্রেফতারের গুঞ্জন উঠলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তা নাকচ করা হয়। তাছাড়া শীর্ষ নেতাদের ফোন বন্ধ থাকায় অবস্থান নিশ্চিত করতে পারছে না নেতাকর্মীরা। সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানেও তারা অংশ নিচ্ছেনা।

সংশ্লিষ্ট একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ৪ আগস্টের ঘটনায় বন্দুক হাতে সামনে থাকা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি জিয়াউদ্দিন বাবলু ইতিমধ্যে ভারত পাড়ি দিয়েছেন।

এছাড়া ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক হারুন মজুমদার, পরশুরাম উপজেলা সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল, দপ্তর সম্পাদক একরামুল হক পিয়াস, প্রচার সম্পাদক এনামুল হক, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ তপু, সাধারণ সম্পাদক নুর করিম জাবেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল মোতালেব চৌধুরী রবিন, পরশুরাম উপজেলা সভাপতি আবদুল আহাদ চৌধুরী সহ বেশ কয়েকজন ভারত চলে গেছেন।

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার মজুমদার বেশ কয়েকদিন চিথলিয়া ইউনিয়নের ধনিকুন্ডা এলাকার বাড়িতে থাকলেও বর্তমানে রাজধানীর শান্তিনগরের বাসায় রয়েছেন। পরশুরাম উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ মজুমদার ৭ আগস্ট অফিস করলেও এরপর পরশুরাম পৌর শহরের খোন্দকিয়া এলাকার বাড়ি থেকে বের হননি।

আওয়ামীলীগ-যুবলীগের অনেকে ঢাকা-চট্টগ্রামে অবস্থান করলেও বেশিরভাগ নেতা ফেনী শহর সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আত্মগোপনে রয়েছেন।

জানতে চাইলে ফেনী জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি পিপি হাফেজ আহম্মদ বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ঢাকায় ছেলের বাসায় রয়েছেন। কারো সাথে কোন যোগাযোগ নেই। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

আরএস