ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতিতে আটকে পড়া ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় বাসিন্দাদের উদ্ধারে বুধবার (২১ আগস্ট) দুর্গত এলাকায় ছুটে এসেছে সেনাবাহিনী,বিজিবি ও কোস্টগার্ড।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ১২টি বোট নিয়ে বন্যা কবলিত এলাকায় পৌঁছেছেন। এছাড়া উদ্ধারকাজে সহায়তার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম থেকে কোস্টগার্ড সদস্যরাও পৌঁছেছে।দুপর থেকে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বিজিবি সদস্যরাও।
এদিকে, বন্যার পাশাপাশি দুর্গত এলাকায় মঙ্গলবার(২০ আগস্ট) রাত থেকেই বিদ্যুৎ নেই। অনেকের ঘরে রান্না করাও সম্ভব হচ্ছে না। অনেকে বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক মুহাইমিন তাজিম জানান, ‘মঙ্গলবার রাত থেকে বন্যা কবলিত এলাকায় তারা পানিবন্দীদের উদ্ধারে কাজ করছে। পানি বেশি থাকায় নৌকায় উদ্ধার অভিযান চালানো যাচ্ছে না। বেশিরভাগ এলাকার একচালা ও পাকাঘর ডুবে গেছে। কোথাও আশ্রয় নেয়ার মতো অবস্থান নেই।’
ফেনী আবহাওয়া অধিদফতরের উচ্চ পর্যবেক্ষক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টায় ২৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিন জেলাজুড়ে বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো: রায়হান মেহেবুব জানান, ইতোমধ্যে সেনাবাহিনী,কোস্টগার্ড,বিজিবি ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। সশস্ত্র বাহিনীর হেলিকপ্টার প্রস্তুত আছে। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে তারা অভিযান শুরু করতে পারছে না। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ত্রাণ/খাবার বিতরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে। পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারে স্থানীয় কিছু স্বেচ্ছাসেবীও কাজ করছেন। প্রয়োজনের তুলনায় সেটা খুব সামান্য। উদ্ধারকাজে সহযোগিতার জন্য সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।’এছাড়া মানবিক সহায়তা হিসেবে জেলায় নগদ ১০ লাখ টাকা ও ৫০০ টন চাল মজুদ রয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরএস