ভারত থেকে আসা পানিতে বাঁধ ভেঙে আখাউড়ার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২৪, ০৫:৫৪ পিএম

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে নেমে আসা পানিতে বাঁধ ভেঙে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বেড়েছে পানি। নতুন করে আরো কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

ভারি বর্ষণ ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ভারত সীমান্তবর্তী আখাউড়ার উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উদ্ভব হয় মঙ্গলবার রাত থেকে। বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ ৩৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়। পানিবন্দি হয়ে পড়ে প্রায় সাড়ে পাঁচশ পরিবার। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধানি জমি, শাকসবজির জমিসহ বিভিন্ন মাছের ঘের।

স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাত থেকে আখাউড়ায় ভারি বর্ষণ শুরু হয়। সকাল থেকে বন্দরের পাশ বয়ে যাওয়া খাল দিয়ে ভারত থেকে তীব্র বেগে পানি ঢুকতে থাকে। এক পর্যায়ে স্থলবন্দর, বাউতলা, বীরচন্দ্রপুর, কালিকাপুর, বঙ্গেরচর, সাহেবনগরসহ অন্তত ৩৪টির বেশি গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। ভেঙে যায় গাজীরবাজার এলাকার অস্থায়ী সেতু। বন্ধ হয়ে পড়ে বন্দরের বাণিজ্য ও যাত্রী পারাপার।

এর আগে, মঙ্গলবার খলাপাড়া এলাকায় হাওড়া নদীর বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে পানি ঢুকতে শুরু করে।

খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান আখাউড়ায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত  বিভিন্ন  এলাকা পরিদর্শন করেন এবং ত্রাণ সামগ্রী  বিতরণ করেন।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল আলম জানান, হাওড়া নদী ও জাজীর খালসহ বিভিন্নস্থানে পানি বিপদ সীমার কাছাকাছি রয়েছে। তা অতিক্রম করলে আরো নতুন করে এলাকা প্লাবিত হতে পারে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ- পরিচালক সুশান্ত সাহা জানান, পাহাড়ি ঢলে ১৯৫ হেক্টর শাক সবজির জমি, ১২২ হেক্টর আমনের বীজতলা, ৩৪৪০ হেক্টর রোপা আমন ধানের জমি পানিতে নিচে তলিয়ে আছে। দ্রুত পানি সরে গেলে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা কম। তবে পানি দীর্ঘস্থায়ী হলে ক্ষয়ক্ষতি বাড়তে পারে। এক সপ্তাহ পর ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রুহি জানান, দুর্গতদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও জেলা প্রশাসন থেকে ত্রাণ বরাদ্দ পাওয়ার সাথে সাথে দুর্গতদের মাঝে ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান জানান, জেলার আখাউড়া ও কসবা বন্যায় আক্রান্ত ১২০০ পরিবারের জন্য ১৫ মেট্রিক টন চাল ও ৫ লক্ষ নগদ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তা বিতরণ করা শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা বন্যায় আক্রান্ত পরিবারগুলোকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের মাঝে পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী রয়েছে।

ইএইচ