নির্মাণের ১৪ বছর পর চালু করা হলেও ধুকে ধুকে চলছে দেশের একমাত্র ঝিনাইদহ ২৫ শয্যা বিশিষ্ট শিশু হাসপাতাল।
চালুর শুরুতেই নেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কোন ল্যাব, সংকট রয়েছে ওষুধ সরবরাহসহ জনবলের। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ঝিনাইদহসহ আশপাশের জেলার শত শত মানুষের।
বিগত ২০০৫ সালের ৭ মে ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের বাস টার্মিনাল এলাকায় ২৫ শয্যা বিশিষ্ট শিশু হাসপাতালটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
রাজনৈতিক বেড়াজালে আটকে বছরের পর পর বন্ধ থাকে হাসপাতালটি। নানা চড়ায় উৎরাই পেরিয়ে ২০২১ সালের ৯ জানুয়ারি সীমিত পরিসরে চালু করা হয় হাসপাতালটি।
রোগী ও স্বজনরা জানায়, দীর্ঘদিন পর চালু হলেও নানা সংকট রয়েছে হাসপাতালটিতে। জনবল সংকটের পাশাপাশি রয়েছে ওষুধ সরবরাহের ঘাটতি। দেশের একমাত্র সরকারি শিশু হাসপাতাল হওয়া স্বত্বেও নেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কোন ল্যাব। যে কারণে হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরও বাড়তি টাকা খরচ করে প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিক থেকে পরীক্ষা করতে হচ্ছে তাদের। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি খরচ হচ্ছে বাড়তি টাকা। তাই দ্রুত হাসপাতালটিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাব চালু করার দাবি রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসীর।
এক শিশু রোগীর পিতা রাজু আহমেদ জানান, আমার ছেলের হঠাৎ জ্বর, ঠান্ডা ও কাশি আসলে আমার ছেলেকে শিশু হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখানে এসে দেখি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নেই কোন ল্যাব। তাই বাড়তি টাকা খরচ করে প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে পরীক্ষা করাতে হয়েছে। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি বাড়তি টাকা খরচ হয়েছে। যদি হাসপাতালে ল্যাব চালু থাকতো তা হলে ভোগান্তির পাশাপাশি বাড়তি খরচ হতো না।
রোগীর স্বজন আকলিমা বেগম জানান, আমার বোনের মেয়ে হঠাৎ অসুস্থ হলে শিশু হাসপাতালে আনলে দেখি এখানে অনেক রোগীর ভিড়। টিকিট কেটে বোনের মেয়েকে ডা. দেখালে ডাক্তার কিছু টেস্ট দেয়। কিন্তু হাসপাতালে কোন টেস্টের ব্যবস্থা না থাকায় প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে পরীক্ষা করাতে হয়েছে। এর ফলে বাড়তি টাকা গুনতে হয়েছে। তাই আমি সরকারের কাছে দ্রুত হাসপাতালটিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাব চালু করার দাবি জানায়।
ঝিনাইদহ ২৫ শয্যা শিশু হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) ডা. আলী হাসান ফরিদ জানান, সরকারি বরাদ্দ কম থাকার কারণে স্থানীয় সহযোগিতায় চলছিলো অন্যান্য কাজ। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তা নিয়েও চিন্তিত।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, হাসপাতালে ল্যাব চালুসহ সংকট সমাধানের চেষ্টা করছি। আশা করছি দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান হবে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য মতে, ২৫ শয্যার শিশু হাসপাতালে বর্তমানে বহির্বিভাগে প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আসা আড়াইশ থেকে তিনশ ও আন্ত:বিভাগে ৬০ থেকে ৭০ জন শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে।
দ্রুত এসব সংকট সমাধান করে হাসপাতালটি পুরোদমে চালু করার দাবি স্থানীয়দের।
ইএইচ