আওয়ামীপন্থি চেয়ারম্যানদের নিয়ে বিরম্বনায় সাধারণ মানুষ

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৪, ০৭:২৬ পিএম

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কলেজছাত্র ইমন হত্যা মামলার আসামি ৫ ইউপি চেয়ারম্যান পরিষদে না গিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সেবা প্রত্যাশীরা। তবে ২ ইউপি চেয়ারম্যানের দাবি তারা নিয়মিত অফিস করছেন।

জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের গোড়াই হাইওয়ে থানায় একদল দস্কৃতিকারী হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া কলেজছাত্র ইমন গুলিবিদ্ধ হয়ে ১৪ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর মারা যান।

এ ঘটনায় ইমনের ভাই সুমন বাদী হয়ে ২২ আগস্ট ১৫৭ জনকে আসামি করে মির্জাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুসহ টাঙ্গাইলের সাবেক ৭ এমপি এবং মির্জাপুর উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। হত্যা মামলার আসামি হওয়ার খবর জানাজানি হলে ওই পাঁচ চেয়ারম্যান পরিষদে না গিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ অবস্থায় ওইসব ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণ পড়েছেন বিরম্বনায়।

পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা হলেন, ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ, আনাইতারা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল ময়নাল, উয়ার্শী ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুব আলম মল্লিক, গোড়াই ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর এবং আজগানা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের সিকদার।

উয়ার্শী ইউনিয়নের বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, চেয়ারম্যান অনেকদিন ধরে পরিষদে আসেন না। আমাদের দরকারি কাজ করতে পারছি না।

তবে উয়ার্শী ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুব আলম মল্লিক বলেন, আমার নামে মামলা হয়েছে। তবে পরিষদের কোন কাজ তো থেমে নেই। পরিষদে গিয়ে সাধারণ মানুষের কাজ করে দিচ্ছি।

আজগানা ইউনিয়নের চিতেশ্বরী গ্রামের বাসিন্দা নজরুল মিয়া বলেন, চেয়ারম্যানকে পরিষদে না পেয়ে প্রয়োজনীয় কাজ করতে পারছেননা এলাকার মানুষ।

আজগানা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের সিকদার বলেন, আমি গতকালও অফিস করেছি। জন্ম নিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদ থেকে শুরু করে পরিষদের সকল প্রকার কার্যক্রম অব্যাহত আছে। উপজেলাতে গিয়ে একটি প্রকল্পও জমা দিয়েছি। গত ৩ আগস্ট থেকে ৫ আগস্ট সন্ধ্যা পর্যন্ত শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। তিনি নিয়মিত পরিষদে যান বলেও দাবি করেন।

ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মিয়ার মোবাইলে কল দিলে তার ছেলে ফোনটি রিসিভ করে বলেন, আব্বা তো বাড়িতে নেই। কোথায় গেছে জানি না।

আনাইতারা ও গোড়াই ইউপি চেয়ারম্যানদের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে তাদের নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। একারণে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ নুরুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই পাঁচ ইউপি চেয়ারম্যান মামলার আসামি জেনেছি। মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তারা দোষী সাব্যস্ত হলে সাময়িক বরখাস্ত হবে। এখন পরিষদে অনুপস্থিত থাকার ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে নির্দেশনা দিবে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইএইচ