শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অলিউল্লাহ মোল্ল্যাকে হত্যার অভিযোগ এনে তৎকালীন সংসদ সদস্য এস.এম জগলুল হায়দার, সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য এস.এম আতাউল হক দোলন ও সাতক্ষীরার সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবিরসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সাতক্ষীরা আমলী আদালত ৫-এ মামলাটির আবেদন করেন নিহত বিএনপি নেতা অলিউল্লাহ মোল্ল্যার স্ত্রী ছালিমা।
বিচারক নয়ন বিশ্বাস ২৮ আগস্ট ২০২৪ তারিখ বুধবার মামলাটি আমলে নিয়ে এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার জন্য শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন । ঘটনার ৮ বছর পর মামলাটি করা হলো।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, তৎকালীন সহকারী পুলিশ-সুপার সাতক্ষীরা (কালিগঞ্জ সার্কেল) মির্জা সালাউদ্দিন আহমেদ, শ্যামনগর থানার এসআই সুধাংশ কুমার মন্ডল, এসআই নিখিল চন্দ্র অধিকারী, এএসআই ইমরান মোল্যা, কনস্টেবল আজমল হোসেন, জাহাঙ্গীর, অহিদুজ্জামান, রেজাউল হোসেন, শহিদুজ্জামান, শ্যামনগর উপজেলা কাশিমাড়ী ইউনিয়নের জয়নগর এলাকার আমিনুদ্দীন সরদারের ছেলে মোঃ আঃ ওহিদ (৫৩), মহর আলী সরদারের ছেলে মোঃ সানাউল্লাহ সরদার (৫২), নূর হোসেন গাজীর ছেলে মশিউর রহমান (৪৬), জহিরউদ্দিন মোল্যার ছেলে আঃ সবুর মোল্লা (৫৫), গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক গাজীর ছেলে গাজী আনিসুজ্জামান আনিছ (৪৫), জাহেরুল্লাহ গাজীর ছেলে আঃ ওহিদ (৫২), আঃ হাকিম (৪৮), আঃ রহিম (৪৪), জয়নগর গ্রামের মৃত আক্কাস গাজী ছেলে আঃ হাকিম (৫৫), আঃ হালিম (৪৮), ঘোলা গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে জিয়াউর রহমান (৩৮), মোন্তেজ গাজীর ছেলে কামাল হোসেন (৪৫), কাশিমাড়ি গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে হাফিজুর রহমান (৪৭), আঃ জব্বার মোড়লের ছেলে মিজানুর রহমান মোড়ল (৫২), জয়নগর গ্রামের আরশাদ আলী পাড়ের ছেলে মহাসিন পাড় (৪৪), জবেদ আলী মোল্লার ছেলে মোজাফফর মোল্লা (৪২), শ্যামনগর পৌরসভার নকিপুর গ্রামের আব্দুল মাজেদ গাইনের ছেলে আব্দুল মান্নান গাইন (৪৮), গোপালপুর গ্রামের মৃত আঃ হামিদের ছেলে হাফিজুর রহমান (৩২), নকিপুর গ্রামের ফকর মিস্ত্রীর ছেলে সাবের মিস্ত্রী, গাবুরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গাইনবাড়ি গ্রামের মৃত নাওশের আলীর ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা শফিউল আযম লেনিন (৫৬), নকিপুর গ্রামের ডা. আঃ জলিলের ছেলে শ্যামনগর সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জহুরুল হায়দার বাবু (৫০) ও বাদঘাটা গ্রামের আঃ কুদ্দুসের ছেলে গোলাম মোস্তফা (৩২)। এছাড়াও এ মামলায় ১৫ থেকে ২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ০৯ জুলাই শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অলিউল্লাহ মোল্ল্যা তার নিজ বাড়িতে শরীকদের সমস্যা নিয়ে সালিশে বসেন। সালিশ চলাকালে মাগরিবের নামাজের আগে তৎকালীন পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীরের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ সদস্য এসে সেখান থেকে অলিউল্লাহ মোল্ল্যাকে ধরে একটি মোটরসাইকেলে করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশের সহযোগিতায় অন্যান্য আসামিরা তার বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
পরের দিন ভোরে বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে গাংহাটি এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় পুলিশ প্রচার দেয় অলিউল্লাহ পুলিশের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে।
মামলার বাদী পক্ষে আইনজীবী আবু বকর সিদ্দিক মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
বিআরইউ