সেতু উপদেষ্টা

ব্যয় কমিয়ে একই পরিমাণ টাকা দিয়ে বেশি প্রকল্প বাস্তবান হবে

জাজিরা (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি: প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৪, ১২:৪৫ পিএম

প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে খরচ কমানোর চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তবে খরচ কমবে মানে কাজ কম হবে এমনটি নয়, একই পরিমাণ টাকা দিয়ে বেশি প্রকল্প বাস্তবায়ন করব এমনটি জানিয়েছেন সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

শুক্রবার (৩০ আগস্ট)  বিকেল ৬টায় জাজিরা সার্ভিস এরিয়া-২ এর কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আমরা নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টা আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন খরচ কমানো বা ব্যয় সংকোচন করতে। দীর্ঘদিন আন্দোলন হয়েছে, কল কারখানা চলেনি, রাজস্ব আদায় হয়নি আশানুরূপ ভাবে।  আমাদের প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় ব্যয় কমানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা নিয়ে আমার অধিক্ষেত্রে যে সব মন্ত্রণালয় বিভাগ আছে তাদের নিয়ে বসে আপাতত আমাদের ব্যয় কমানোর চেষ্টা করছি। খরচ কমাবো মানে এইনা আমরা কাজ কম করবো, একই পরিমাণ টাকা দিয়ে বেশি প্রকল্প বাস্তবান করব।

তিনি জানান, শুধু জিডিবির গ্রোথ না বাড়িয়ে ও পার ক্যাপিট্যাল ইনকামের সংখ্যা না বাড়িয়ে আমরা প্রকৃত উন্নয়নে নিতে চাই। আমাদের মূল ফোকাস প্রকৃত উন্নয়ন। আমরা উন্নয়নকে আর পরিসংখ্যান দিয়ে সীমিত করব না। জিডিপির গ্রোথ পার ক্যাপিট্যাল এগুলো হবে কিন্তু আমরা নিশ্চিত করবো মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন হয় মানুষ যাতে বিদ্যুৎ পায়। আমরা বড় প্রকল্প থেকে টাকা সাশ্রয় করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে উন্নয়ন করতে চাই।

দেশটাকে যদি দেহের সাথে তুলনা করা হয় তাহলে স্বাস্থ্যের লক্ষণ হবে শরীরের প্রতিটি অঙ্গে রক্ত সঞ্চালন হবে আমরা সেটি না করে পূর্বে শুধু ঢাকা বা বড় শহর কেন্দ্রিক নয় পুরো দেশে স্বাস্থ্যবান উন্নতির চেষ্টা করব।

খুলনা রূপসা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিষয়ে তিনি বলেন, খুলনার রুপসায় ৮৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্যাস সরবরাহ নাই। উন্নয়ন দেখানো হয়েছে।

বিভ্রান্ত করা হয়েছে। জিডিবি বাড়ছে। গ্রোথ বাড়ছে।  কিন্তু এ গ্রোথ তো কাজের না। যদি বিদ্যুৎ না থাকে তাহলে তো এ গ্রোথ একটা সংখ্যা মাত্র। এডিবির লোনে করা এটাতো বিরাট খরচ ৮৮০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট ১২০০ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প। এটা তো বিপুল ব্যয়। বাংলাদেশের জনগণকে এটা পরিশোধ করতে হবে। আমি রুপসা যাচ্ছি ঐ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কি করা যায় সেটা দেখবো।

এ সময় পদ্মাসেতুর ব্যয় নিয়ে তিনি জানান, আমি আনন্দের সাথে জানাচ্ছি পদ্মা সেতু প্রকল্পে সর্বশেষ প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণ করে এখন চূড়ান্ত ব্যয় দাড়িয়েছে ৩০ হাজার ৭৭০ কোটি ১৪ লাখ টাকা। সাশ্রয়কৃত টাকার মূল বিবরণ হচ্ছে মূল সেতুতে ৫৩০ কোটি টাকা, নদীশাসনে ৮০ কোটি টাকা, সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়াতে ১৭৮ কোটি টাকা। প্রাইস কন্টিডেন্সি ৫০০কোটি টাকা, ভূমি অধিগ্রহণ ১০৩ কোটি টাকা, পরামর্শ ২০০ কোটি টাকা ও অন্যান্য ২৪৪ কোটি।

পদ্মা সেতু প্রকল্পে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যয় সাশ্রয় করেছে ১ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা। এটা থেকে আপনারা বুঝতে পারেন আমাদের এখানে যদি ভালো সরকার থাকতো তাহলে হয়ত আমরা পদ্মাসেতু অনেক কম ব্যয়ে কর‍তে পারতাম।

উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সঙ্গে এসময় সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মুনজুর হোসেন, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হাবিবুর রহমান, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. নূরুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

বিআরইউ