পাহাড়ের পাশে একটি বাড়ি। পাশে নেই কোনো বাড়ি। ওই বাড়িতে ভাইবোন, আত্মীয়-স্বজন কিংবা পাড়া- প্রতিবেশীর কেউ যেতে চান না। বাড়ির মালিক তোফাইয়েল আহমেদ ওরফে ডাকাত টুলু অলিখিত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
এমনকি কোনো ভিক্ষুকও যায় না। মেহেরঘোনা রেঞ্জের দক্ষিণ পূর্বে দিকে পাহাড়ি জঙ্গলে ভরা গ্রামের নাম কালিরছড়া, ভুতিয়াপাড়া৷ কক্সবাজারের নতুন উপজেলা ঈদগাঁও কালিরছড়া, ভুতিয়াপাড়া গ্রামের একেবারে দক্ষিণ দিকের শেষ প্রান্তের বাড়ি ওটা। একাধিক মামলায় জেল কেটে বের হয়ে পুনরায় অস্ত্র মহড়া ও দখলবাজিতে লিপ্ত হয়েছেন।
সম্প্রতি কক্সবাজারের নতুন উপজেলা ঈদগাঁও কালিরছড়া, ভুতিয়াপাড়া গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে অস্ত্র কাঁধে নিয়ে মহড়া দিতে দেখা গিয়েছে৷ যাতে আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকায়। সরকার পরিবর্তনের পর যৌথবাহিনীর অভিযান শুরু হওয়ায় ডাকাত সরদার টুলুর অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
ভুতিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ফজলুল হক জানান- ওই গ্রামের মৃত ছৈয়দ আকবরের ছেলে তোফাইল আহমদ টুলুকে `ডাকাত টুলু না বললে যে কারও চিনে নিতে কষ্ট হয়। কেউ কেউ আবার তাকে চুর টুলু নামেও চেনেন। পাহাড় দখল, ধর্ষণ, ডাকাতি, চুরি- এমন কোনো অপরাধ নেই যা তোফাইল আহমদ টুলু করেননি। তার এসব অপরাধের প্রতিবাদ করায় বড় ভাই নুরুল হুদাকে কুপিয়ে হাত কেটে ফেলে টুলু।
এলাকাবাসী পক্ষ থেকে সৈয়দ নুর জানান, ভাইবোনদের বাবার সম্পত্তি থেকে শুধু বঞ্চিত নয়, অন্যের জমিও আত্মসাৎ করেছেন টুলু। থানা ও আদালতে টুলুর বিরুদ্ধে অন্তত অর্ধেক ডজন মামলা রয়েছে।
নুরুল হুদা বলেন, টুলুকে আমি কোলেকাখে করে মানুষ করেছি। আমাকে হত্যার জন্য সে এখনও ঘুরে বেড়ায়। আমার বিরুদ্ধে মামলাসহ অন্তত দুই ডজন মামলা করেছে৷
স্থানীয় গ্রাম পুলিশ আজিজুল হক জানান, ভুতিয়াপাড়া গ্রামে এক আতঙ্কের নাম টুলু। কেউ তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায় না। তাঁর নানা অপকর্মের প্রতিবাদ করলেই কোনো না কোনো মামলায় জড়িয়ে জেলে পাঠানো হয়। এলাকার কোনো মানুষের সঙ্গে নেই সুসম্পর্ক। নির্জন ওই বাড়িতে একাই বসবাস করেন তিনি। প্রকাশ্যেই অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ান।
ঈদগাঁও থানার অফিসার দায়িত্বপ্রাপ্ত ওসি জুয়েল চৌধুরী বলেন- তার বিরুদ্ধে হত্যা, দখলসহ একাধিক মামলা রয়েছে। অস্ত্র মহড়ার ছবি পেয়েছি। আমরা তাকে গ্রেফতার অভিযানে যাবো।
বিআরইউ