কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুরবুড়িয়া এলাকা দিয়ে গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙ্গে সৃষ্ট সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় উপজেলার সাথে সংযোগ সড়ক সমূহ মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার সাথে গোমতীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ভাঙ্গনের এলাকার সড়ক সমূহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতবিক্ষত,যার ধ্বংসলীলায় পরিণত হয়েছে। যার ফলে মানুষ এখন চরম ঝুঁকি নিয়ে দুর্গত এলাকায় চলাচল করতে হচ্ছে। বৃষ্টি হলে শুকনো এলাকাসমূহ পুনরায় বন্যায় নিমজ্জিত হয়ে যায়। অপর দিকে বন্যার পানি নেমে গেলেও রেখে গেছে ক্ষতের চিহ্ন। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বন্যায় সড়কসমূহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ফলে অনেক স্থানে বন্ধ রয়েছে যান চলাচল।
বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের গ্রামীণ কাঁচা পাকা সড়কের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এর মধ্যে কাঁচা পাকার সংখ্যা ১৬০.৫৭ কি.মি., কাল ভাটের সংখ্যা ৪ টি দৈর্ঘ্য ৪৯ মি.। এতে প্রায় শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জরুরী ভিত্তিতে কুমিল্লা ভরাসার বুড়িচং,বুড়িচং - রাজাপুর শংকুচাইল সড়কের জরুইন সহ সড়কের বিভিন্ন অংশের ক্ষতিগ্রস্ত স্থান, বুড়িচং বাকশীমূল রাস্তা সমূহ মেরামত /নির্মাণ করা দরকার।অপরদিকে বন্যার বাঁধের এলাকার নানুয়ার বাজার ইন্দ্রবতী, ভেড়াজাল- শিকাপুর -বুরবুড়িয়া মাজার এলাকার রাস্তাসহ বুড়িচং উপজেলায় বন্যায় ছোট-বড় ১৫৬ টি সড়কের কমবেশি ক্ষতি সাধিত হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগ জরুরী ভিত্তিতে মেরামতে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে, স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি দ্রুত বন্যা কবলিত এলাকার সড়ক সমূহ সংস্কার/মেরামত বা নির্মাণ করার।
অন্যদিকে গ্রামীণ ও আঞ্চলিক সড়কের বিভিন্ন অংশ ভেঙে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে সীমিত আকারে যানচলাচল করছে । তবে, রাস্তাগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সরেজমিনে দেখা গেছে, চরম দুর্ভোগের মধ্যদিয়ে যাত্রী সাধারণ যাতায়াত করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন বিভিন্ন সড়কে একাধিক স্থান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পিচ উঠে ,ভেঙে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো স্থানে ৫-১০ ফুট সমপরিমাণ মাটি সরে গেছে, কোথাও বড় বড় ভাঙার ফলে যোগাযোগ এখন বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নানুয়ার বাজার মহিষমারা - শিকারপুর বুরবুড়িয়া সড়ক। এ রাস্তায় প্রায় এক
কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয়েছে। চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় স্থানীয়রা পড়েছেন দুর্ভোগে। অসুস্থ, শিক্ষার্থী ও শিশুদের যাতায়াত ভোগান্তি অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।
উক্ত সড়ক থেকে পানি নেমে যাওয়ায় খাড়াতাইয়া, শিকারপুর, জরুইন, হরিপুর, বাকশীমূল , কালিকাপুর, আনন্দপুর গ্ৰামের যুবসমাজ ইট ও শুরকি ফেলে রাস্তা চলাচলের উপযোগী করতে দেখা গেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ষোলনল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হাজী মো. বিল্লাল হোসেন, রাজাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, বুড়িচং সদর চেয়ারম্যান আলহাজ জয়নাল আবেদীন এবং বাকশীমূল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল করিম বলেন, আমাদের এলাকার রাস্তাগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাছাড়া উপজেলা সদরের যাওয়ার একমাত্র সড়কটি বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে গেছে। আমাদের এলাকার সড়ক গুলো মেরামত করে সাধারণ মানুষের চলাচলের উপযোগী করতে অনেক টাকা এবং সময় লাগবে। স্থানীয় যুব সমাজের আগ্রহ ও ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা সমূহ মেরামতে এগিয়ে আসায় এলাকাবাসী আনন্দিত।
এ ব্যাপারে বুড়িচং উপজেলা প্রকৌশলী আলিফ আহমেদ অক্ষর বলেন, বন্যায় বুড়িচং উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নের প্রায় ১৫৬ টি সড়কের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
১৬০.৫৭ কি:মি: কাঁচা-পাকা সড়ক ও গ্রামীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সড়কগুলো মেরামতের কাজ জরুরী ভিত্তিতে চলছে। কুমিল্লা বুড়িচং- ব্রাহ্মণপাড়া সড়ক বন্যায় মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করা হয়েছে। এছাড়া বানভাসিদের ২৫০ এর অধিক লোকজনকে খাদ্য সহায়তা করা হয়েছে। সকল সড়কে যানবাহ চলাচলের উপযোগী দ্রুত করা হবে। আমাদের সকল চাহিদা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
আরএস