চৌগাছায় প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪, ০১:৫৮ পিএম

যশোরের চৌগাছায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে প্রতিমা তৈরির ধুম পড়েছে। কারিগরদের দম ফেলার ফুরসত নেই। কয়েক দিন বাদেই প্রতিমার গায়ে পড়বে রঙের আঁচড়। তবে গত বছরের চেয়ে কমেছে পূজা মণ্ডপের সংখ্যা।

উপজেলার পৌর এলাকার কালিতলা কালি মন্দিরে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। এই মন্দিরের ভেতরে এখন শোভা পাচ্ছে ছোট-বড় প্রতিমা। বাঁশ-কাঠ আর কাদামাটি দিয়ে তৈরি প্রতিমাগুলো দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন সনাতন ধর্মের লোকজন।

এরই মধ্যে মণ্ডপের কাঠামো তৈরি এবং খড়ের কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে মাটির শেষ কাজ। এরপর মাটির তৈরি প্রতিমায় রঙ তুলির কাজ করা হবে।

সরেজেমিনে মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত মৃৎশিল্পী (কারিগর) যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গঙ্গানন্দপুর গ্রামের মাহীন্দ্র দাস ও তার সহকারী একই গ্রামের গৌয়ুর মন্ডল, মনোজীত ঢালি ও কৃষ্ণ সরকার। তারা ৩০ বছর ধরেই প্রতিমা তৈরির সাথে জড়িত।

প্রতিমা বিক্রি করেই তাদের সংসার চলে। প্রতিটি প্রতিমা ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার অর্ডার পেয়েছেন। দুর্গাপূজা ছাড়াও তারা কালীপূজা, লক্ষীপূজা, সরস্বতী পূজা, জগৎ ধাত্রী পূজাসহ বিভিন্ন ধরনের পূজার প্রতিমা তৈরি করেন।

এ মৌসুমে তারা ৭টি দুর্গাপূজার প্রতিমা সেট তৈরি করছেন। মাহীন্দ্র দাস ও তার দল সারা বছরই প্রতিমা তৈরির কাজ করেন। প্রতিমা বিক্রি করেই তাদের সংসার চলে। এসব প্রতিমা দেশের সাতক্ষীরা, যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া ও মাগুরায় তারা বিক্রি করেন।

মাহীন্দ্র দাস জানান, প্রতিবছর তিনি ১০টিরও বেশি প্রতিমা তৈরির অর্ডার পান। এ বছর তিনি অনেক অর্ডার পেলেও তৈরি করছেন ৭ টি প্রতিমা।

বলেন, ছোটবেলা থেকেই প্রতিমা গড়ার কাজ খুবই পছন্দ করি। প্রায় ২৫ বছর আগে থেকে প্রতিমা গড়ার কাজ করছি। এখন আমার নেশা হয়ে গেছে। এ কাজে আমি খুবই আনন্দ পাই।

চৌগাছা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ বলাই চন্দ্র পাল বলেন, আগামী ৮ অক্টোবর মহাপঞ্চমী দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব শুরু। ১২ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে এই উৎসব। ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজা থেকে মণ্ডপে মণ্ডপে বেজে উঠবে ঢাকঢোল আর কাঁসার শব্দ।

গত বছর চৌগাছাতে ৪৯টি মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে এ বছর দুর্গাপূজার মণ্ডপের সংখ্যা কমেছে।

এ বছর ৪০টি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

চৌগাছা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ মিশ্র জয় বলেন, দেবীর আগমন পালকিতে ও প্রস্থান হবে ঘোড়ায় চড়ে। যেহেতু কোনও দলীয় সরকার ক্ষমতায় নাই, তাই কোনও নেতাদের আর্থিক সহায়তা পাওয়ার কোনও আশা নাই। সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা প্রতিবার সকল মন্দিরে করে থাকে সকল সরকার এবারও পাবো এরকম আশ্বাস আমরা পেয়েছি।

চৌগাছা থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, বিগত বছরগুলোর মতো এ উপজেলায় অনুষ্ঠিত সকল দুর্গা মন্দিরের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুস্মিতা শাহা বলেন, উপজেলার যে সকল মন্দিরে পূজা উদযাপন হবে সেসব মন্দিরে বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হবে। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মন্দিরের নিরাপত্তার জন্য সকল ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইএইচ