বিভাগীয় কমিশনার

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উত্তরণে জনসচেতনতার বিকল্প নেই

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪, ০৩:৫২ পিএম

ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার এবং সিটি করপোরেশনের প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া বলেছেন- পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উত্তরণে জনসচেতনতার বিকল্প নাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সরকারের সকল দপ্তর একযোগে কাজ করছে।

বলেন- নিয়মিত বাজার মনিটরিং করতে হবে। কোথাও যেন পাবলিক ভোগান্তি না হয়, সেদিকে সকলের সতর্কভাবে সজাগ থাকতে হবে। নৈতিকতার দ্বারা নিজেদের পরিচালনা করতে হবে, নিজের বিবেকের কাছে নিজেকে পরিশুদ্ধ রাখতে হবে।

সোমবার সকালে বিভাগীয় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সমন্বয় সভায় এসব কথা বলেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার এবং সিটি করপোরেশনের প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া।

ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সভায় সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উত্তরণে এগিয়ে আসার নির্দেশ দেন সভাপতি।

সভাপতি বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চুরি, ভাঙচুর রোধে কমিটি গঠন এবং মনিটরিং জোরদার করতে হবে। বাজারে শীতকালীন সবজি আসতে শুরু করলে পণ্যমূল্য কিছুটা কমতে পারে। আপনাদের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে। শুধু বলে দিলাম, এটাই শেষ নয় করতে হবে।

ময়মনসিংহের বিভিন্ন দপ্তরের সমস্যা ও সম্ভাব্য সমাধান নিয়েও কথা বলা হয় অনুষ্ঠানে।

সভাপতি বলেন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩২ জন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বদলি করা হয়েছে। আগামী মাস থেকে লোকবল পুরোপুরি পাওয়া যাবে। নতুন উদ্যমে অক্টোবরের শুরু থেকেই আইনশৃঙ্খলার দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাবে। শেরপুর সদর থানা পুড়ে যাওয়ায় সেখানে পরিস্থিতি একটু খারাপ।

এ সময় শহরের যানজট ও ট্রাফিক পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন সভাপতি। সিএনজি লাইন ঠিক করা, ত্রিশালগামী শালবনকে মূল রাস্তার ভিতরে পাঠানো, রোটেশন পদ্ধতিতে অটোরিকশা চালানো মনিটরিং, ময়মনসিংহ-জামালপুর রোডে বিআরটিসি বাস চালানোর পরিকল্পনার ব্যাপারে জানান বিভাগীয় কমিশনার।

এ সময় ট্রেনে চলন্ত অবস্থায় ডাকাতি, ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া পর্যন্ত চলাচলকারী লোকাল ট্রেনগুলো হঠাৎ গতি স্লো হয়ে যাওয়া এসব বিষয় তুলে ধরেন ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার প্রতিনিধি। তার থানায় জনবল কম। আগামী মাসে পরিস্থিতির অগ্রগতি হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

সীমান্তে বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনারকে অবহিত করেন বিজিবি সেক্টর কমান্ডার।

তিনি বলেন, নেত্রকোণার কলমাকান্দায় চন্দ্রডিঙ্গা নামক ট্যুরিস্ট স্পটে সাধারণ জনগণ ঘুরতে গিয়ে না বুঝে ভারতীয় সীমান্তে ঢুকে যায়, যা আইনগতভাবে দণ্ডনীয়। এছাড়াও শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় বালু উত্তোলন ও রাস্তার ক্ষতিসাধন, হাতির অনুপ্রবেশ ঠেকাতে হালুয়াঘাট সীমান্তে পুরো বর্ডার জুড়ে বৈদ্যুতিক তারের বেষ্টনী নিয়েও কথা বলেন তিনি।

এছাড়াও আসন্ন পূজায় ময়মনসিংহ বিভাগে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি।

এবার ময়মনসিংহ বিভাগে সর্বমোট ১ হাজার ৫শ ৩৪টি পূজা মণ্ডপ থাকবে যার মধ্যে ৬শ ৮৪টি ময়মনসিংহ জেলায়। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে কোথায় যেন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্য সতর্ক থাকার আহ্বান জানান সভাপতি।

পূজামণ্ডপে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা লাগানো, চার্জার লাইট লাগানোর নির্দেশনা দেন তিনি।

সর্বশেষে সভাপতি বলেন, ইন্টেগ্রিটি বা নৈতিকতা নিয়ে জনগণের কল্যাণে ও দেশের জন্য কাজ করলে ভয়ের কিছু নেই। জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা না করলে বা লোভ না করলে কেউ আপনাকে কিছু করতে পারবে না।সরকারি কর্মচারী হিসেবে সরকারের পলিসি বাস্তবায়ন আমাদের দায়িত্ব। এজন্য মনোবল থাকতে হয়। আশা করবো সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতায় ময়মনসিংহ বিভাগে সবচেয়ে ভালো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় থাকবে।

সভায় ময়মনসিংহের ডিআইজি কার্যালয়ের প্রতিনিধি, সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনার জেলা প্রশাসকবৃন্দসহ আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় কমিটির সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরপ্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

ইএইচ