রাজবাড়ীতে ৫টি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন, ৪ জন গ্রেপ্তার

রাজবাড়ী প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৪, ০৪:০২ পিএম

রাজবাড়ীর ৪টি উপজেলাতে ৫টি হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এ বিষয়ে বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার সময় রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিং করেছেন পুলিশ মোছা. শামিমা পারভীন। 
পুলিশ সুপার বলেন, গত ১৫ সেপ্টেম্বর পাংশা থানার বিলমন্ডব এলাকার রতন খাঁ তার স্ত্রী চামেলীকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করার চেষ্টা করে। সে ১৬৪ ধারায় ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

এ ব্যাপারে পাংশা মডেল থানায় চামেলি বেগমের বাবা মো. আ. মালেক মন্ডল বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের হয়।

গত ২০ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে কালুখালী থানার মাধবপুর এলাকায় ট্রান্সফরমারের তার চুরি করতে গেলে জনগণ নাজমুল মোল্লাকে পিটিয়ে আহত করে হাসপাতালের গেইটে ফেলে রেখে যায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়।

এ ব্যাপারে তার স্ত্রী আন্না বেগম বাদী হয়ে কালুখালী থানায় মামলা দায়ের করেন। নাজমুল মোল্লার নামে ডাকাতির প্রস্তুতি ৩টি, চুরি ৬ টি সহ ১১টি মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় ভিডিওধারনকারী মূল ব্যক্তি সালাম দরিকে মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

গত ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার সময় একদল দুর্বৃত্ত গোয়ালন্দে সুশীল সরকারকে কুপিয়ে ও গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। তার নামে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় হত্যাসহ অস্ত্র আইনে সাতটি মামলা রয়েছে।

নিহতের ভাই সুনীল সরকার বাদী হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ জনি নামে একজনকে মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছে।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর ভোরে রাজবাড়ী সদর থানার রামকান্তপুর ইউনিয়নের মাটিপাড়া এলাকায় রশিদ তার স্ত্রী বন্যাকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। রশিদকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

এ ঘটনায় রশিদ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।

এ ব্যাপারে রাজবাড়ী সদর থানায় নিহত বন্যার বড় ভাই মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছে।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাজবাড়ী সদর উপজেলার পুর্ব ভবদিয়া গ্রামে মিনহাজ শেখ নামে একজন ১২ বছরের শিশুকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

গত সোমবার রাতে মিনহাজ শেখের বাবা আজাদ শেখ থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন।

পরদিন মঙ্গলবার সকালে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। মিনহাজ শেখ পার্শ্ববর্তী এলাকার মুক্তার সর্দারের বাগানের মাল্টা খাওয়ার লোভে বাগানে প্রবেশ করতে যায়। কিন্তু মুক্তার সর্দার তার বাগান কাঁটা তারের বেড়া ও বিদ্যুতায়িত করে রাখে। শিশুটি সেই বাগানের বেড়ার বিদ্যুতের তারের সাথে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায়। পরে মৃতদেহ মুক্তার সর্দার ও তার সহযোগীরা ধান ক্ষেতের মাঝখানে ফেলে রেখে দেয়।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে বাগানের মালিক ও দারোয়ানের বিরুদ্ধে আজাদ শেখ বাদী হয়ে রাজবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেছে। আসামীরা পলাতক রয়েছে। গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংকালে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) রেজাউল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মুকিত সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইফতেখারুজ্জামানসহ পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইএইচ