শিক্ষিকা-ছাত্রী কেলেঙ্কারি,নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি সহ অসংখ্য ঘটনায় ফেনী আলীয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুল হাসানের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জন ঘোষণা দিয়ে মাদরাসার ফটকগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে শিক্ষার্থীশূন্য এ পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকজন শিক্ষককে ক্যাম্পাসের বাহিরে বসে থাকতে দেখা গেছে।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে মাদ্রাসা মাঠে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা মিজান রোড হয়ে ট্রাংক রোডের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে কিছুক্ষণ অবস্থান করে অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবিতে নানা স্লোগান দেয়।
এরপর পুরাতন জেল রোড, কলেজ রোড প্রদক্ষিণ করে পুনরায় মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে যায়। আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল মাহফুজ ও সালমান হোসেন, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কামিল ১ম বর্ষের মোহাইমিন সাইমুন ও ফাযিল ৩য় বর্ষের আল হাসান। তারা সেখানে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেয়।
ওইসময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তারা বলেন, “সোমবারের হামলার ঘটনার সঠিক বিচার চাই। স্বৈরাচারের দোসর মাওলানা মাহমুদুল হাসান তার ছেলে জুনাইদসহ যারা হামলার ইন্ধনদাতা তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
একইসঙ্গে অধ্যক্ষ পদ থেকে মাহমুদুল হাসান পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।” একপর্যায়ে দুপুর ২টার দিকে মাদরাসার সবকটি ফটকে ১৩টি তালা ঝুলিয়ে দেয়।
এদিকে তালা ঝুলিয়ে দেয়াার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সহকারী অধ্যাপক গাজী মীর মোহাম্মদ ইকবালের নেতৃত্বে শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ মাদ্রাসা গভর্নিং বডির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিষয়টি অবগত করেন।
জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, শিক্ষক ও আন্দোলনকারী ছাত্রদের বক্তব্য শুনেছি। তাদের বক্তব্য ইসলামী আরবি বিশ^বিদ্যালয়ে পাঠানো হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার আলোকে নীতিমালা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অন্যদিকে ফেনী আলীয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুল হাসানের পদত্যাগ চেয়ে সোমবার আন্দোলনকারীদের উপর হামলার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার হামলায় আহত ফাজিল (অনার্স) আল হাদিস বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ রুপম বাদি হয়ে অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসান ও তার ছেলে শিক্ষক জুনাইদ আল মাহমুদ সহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
আসামিদের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইতিহাসের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনও আসামি রয়েছেন। ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
ফেনী মডেল থানার ওসি মর্ম সিংহ মারমা জানান, ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার হওয়া ফাজিল ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী সিয়াম ও বিরিঞ্চি এলাকার ইসমাইল হোসেন জয়কে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত; সোমবার অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসানের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করে তার অনুসারীরা। এতে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়।
আরএস