মাগুরায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী শিমুল হুসাইনের বিরুদ্ধে সদর থানায় ২টি অভিযোগ দিয়েছেন সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর মাগুরা। উপসহকারী প্রকৌশলী শিমুল হুসাইনের বিরুদ্ধে অসদাচরণ, নির্বাহী প্রকৌশলী এএম আতিক উল্লাহ নামে মিথ্যা অপপ্রচার ও তার সুনাম বিনষ্ট করার ঘৃণ্য অপচেষ্টায় লিপ্ত হওয়ায় তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে আজ মানববন্ধন করেছেন মাগুরা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেই সাথে তার সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ দুপুরে মাগুরা সড়ক ও জনপথ নিজ কার্যালয়ে এ মানববন্ধন সমাবেশ করেন সড়ক ও জনপথের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ।
অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, আরিফুল ইসলাম মমিন পিতা মো. নজরুল ইসলাম সাংবিষ্ণুপুর থানা দামুড়হুদা জেলা চুয়াডাঙ্গা। মাগুরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নাইটগার্ডে কর্মরত। অভিযোগ পত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন ৬-১০-২৪ সন্ধ্যা আনুমানিক ৬:৩০ ঘটিকায় মাগুরা ঢাকা রোড থেকে নির্বাহী প্রকৌশলীর নাস্তা নিয়ে রিকশায় মোটরস শ্রমিক ইউনিয়নের পশ্চিম পাশে তানজেল খানের স্বমিলের সামনে পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা মোটরসাইকেলে হেলমেট পরিহিত দুইজন অতর্কিতভাবে তার রিকশা প্রতিরোধ করে। এবং রিকশা থেকে নামিয়ে ঘাড় এবং মাজায় বিক্ষিপ্তভাবে আঘাত করে মারাত্মক ফোলা জখমের অভিযোগ করেন অজ্ঞাত দুইজনসহ উপসহকারী প্রকৌশলী শিমুল হুসাইনের বিরুদ্ধে।
অপর অভিযোগপত্রে দেখা যায়,আমিরুল ইসলাম(বাংলোর নাইট গার্ড) পিতা আকমল বিশ্বাস সাং বরুনাতৈল থানা ও জেলা মাগুরা। সদর থানা অভিযোগ পত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন ০৬/১০/২৪ ঘটিকার সময় গেটে ডিউটি করাকালে অজ্ঞাতনামা ৮ থেকে ৯ টি জীব এবং মাইক্রোবাস নিয়ে গেটের সামনে অবস্থান করে এবং অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৪০ জন লোক গেট খুলতে বলে। তখন আমি গেট খুলতে রাজি না হলে,আমাকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখায় এবং হুমকি প্রদান করে। কাল থেকে তোর চাকরি থাকবে না,তোর আতিকুল্লাহ স্যার আছে কিনা? তখন আমি বলি যে, স্যার নেই। এরপর আমাকে বলে তুই গেট খোল! পরবর্তীতে আমাকে বলে তোকে জীবনের মত শেষ করিয়া ফেলিবো। তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও অভিযোগে জানিয়েছেন।
তবে চলমান অভ্যন্তরীণ কোন্দলে মাগুরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী শিমুল ও মাগুরা সদর থানায় উক্ত অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী এএম আতিক উল্লাহ সহ ৫ জনের নামে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, আমাকে সর্বপ্রথম আমার রুমে মারপিট করে তারপর নির্বাহী প্রকৌশলী রুমে নিয়ে যান। মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উপসহকারী প্রকৌশলী শিমুল হুসাইন বলেন,সকালে অফিসে গিয়ে নিজের কক্ষে বসে কাজ করছিলাম। এর মধ্যে দুপুর ১২টার দিকে একই অফিসে কর্মরত আবদুলআজিজ,মমিন এবং নির্বাহী প্রকৌশলীর ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত সিরাজসহ ৮-১০ জন আমাকে কিলঘুষি মারতে মারতে নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে উপস্থিত নির্বাহী প্রকৌশলী আতিক উল্লাহ আমার জামা-কাপড় খুলে অফিসের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখার নির্দেশ দিলে তারা মারতে মারতে আমার জামা এবং প্যান্ট খুলে ফেলে। এ সময় হাতজোড় করে সম্মানহানি না করতে অনুনয় করলে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে অফিসের সহকর্মীরা আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ বিষয়ে মাগুরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এএম আতিক উল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি উপসহকারী প্রকৌশলী শিমুল হুসাইনের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিমুল নামের ওই উপসহকারী প্রকৌশলী এ অফিসের আগের নির্বাহী প্রকৌশলীর যোগসাজশে সরকারি অর্থ তসরুপের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। তিনি আমার অনুমতি ছাড়া অফিসের বেশকিছু গোপনীয় কাগজপত্র রাজশাহীতে মাগুরার পূর্বতন নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে প্রেরণ করেন। এর মাধ্যমে তারা সরকারি অর্থ লোপাটের সুযোগ পেতেন। বিষয়টি জানতে পেরে ১ অক্টোবর শিমুলকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। এতে বেকায়দায় পড়ে তিনি আমার বিরুদ্ধে অফিসের অন্যদের ইন্ধন দিচ্ছিলেন। এ বিষয়ে সবার সঙ্গে কথা বলার পর তারা প্রকৃত ঘটনা উপলব্ধি করেছেন। বিধায় তাদের কেউ ওই কর্মকর্তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে কিনা সেটি জানি না। তবে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি।
আরএস