রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সি বাজার নামক এলাকায় নতুন করে দেখা দিয়েছে পদ্মা নদীর ভাঙন। এতে করে প্রতিদিনই ফসলের জমি ঘরবাড়ি ও মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল কবর নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। কান্না আর আহাজারিতে নির্ঘুম রাত কাটে পদ্মা পাড়ের মানুষদের।
বুধবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সিবাজার এলাকা ও কাউয়া জানি এলাকা এবং দৌলতদিয়া ৫নং ফেরিঘাট জামে মসজিদ ও ফেরিঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। ভাঙনের কারণে দেবগ্রাম ইউনিয়ন ও দৌলতদিয়া ইউনিয়ন মানচিত্র থেকে বিলীন হতে বসেছে। জরুরিভাবে নদী ভাঙন প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেওয়া না হলে যতটুকু আছে সবগুলোই নদীগর্ভে চলে যাবে।
কৃষক খবির সরদার বলেন, আমাদের ঘরবাড়ি তিনবার নদীগর্ভে চলে গেছে। তারপর এসে কাউয়া জানি এলাকায় বাড়ি করেছি। এখন আবার নদীর গর্ভে চলে গেছে আমার বসতবাড়ি। এখন আমি কোথায় বাড়ি করব আমি কোন কিছু বুঝে উঠতে পারতেছি না। আমার ফসলি জমি নদীতে চলে গেল বাড়িটিও নদীতে চলে গেল। এখন আমি কোথায় যাব কি করে খাবো। এখন আমার দাবি সরকারের কাছে বস্তা ফেলে নদীটি শাসন করা হোক।
কৃষক জুলহাস সরদার বলেন, আমাদের অনেক ফসলি জমি ছিল। সব জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। আমাদের ঘর বাড়ি চারবার নদীতে ভেঙে চলে গেছে। আজ কয়েক বছর ধরে মুন্সিবাজার, কাউয়াজানি এলাকায় বাড়ি করে অন্যের জমি নিয়ে আবাদ করে কোনরকমভাবে জীবনযাপন করছি। আবারও নতুন করে নদীভাঙন দেখা দেওয়ায় চরমভাবে নদী ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছি।
মোছা. শামেলা বেগম বলেন, আমার বাবা ২০০৫ সালে ইন্তেকাল করেছেন, আমাদের যতটুকু জমিন ছিল সবটুকু নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। শুধু বাকি আছে বাবার কবরের জায়গা।
দেবগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন, তিনবারের এমপি নদী শাসন করে দিবে বলে অনেক আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন কিছুই হয়নি। নদী শাসন না করা হলে এই চর থাকবে না। আমরা যে কোনো কিছু করব আমাদের হাতে তেমন কোনো বরাদ্দ নেই।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র আমার সংবাদকে জানান, আমি সেখানে গিয়েছিলাম এবং নদী ভাঙনের বিষয়ে আমরা পানি উন্নয়নকে চিঠি দিয়েছি ও ডিসিকে চিঠি দিয়েছি। মিটিংয়ে বারবার নদী ভাঙনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। নদী ভাঙনের বিষয়টি সকালকে জানিয়েছি। আশা করি শিগগিরই সমাধান পাবো।
ইএইচ