পাবনার ভাঙ্গুড়ায় পুকুরপাড় উদয়ন ক্লাব দখলকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের হামলায় বিএনপির অন্তত ১৮ জন ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ৬ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে একজনকে ঢাকায় এবং দুইজনকে পাবনা সদর হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা যায়।
শনিবার (১২অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে উপজেলা খানমরিচ ইউনিয়নের পুকুরপাড় গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। রাতেই ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার, ওসি শফিকুল ইসলাম এবং সেনা সদস্যরা হাসপাতালে আহতদের দেখতে আসেন।
জানা যায়, পুকুরপাড় গ্রামে উদয় সংঘ নামে একটি সামাজিক সংগঠন রয়েছে। সংগঠনের সদস্য সংখ্যা শতাধিক। বেশ কিছুদিন ধরে এই সংগঠনের কার্যালয়ের চাবি সংগঠনের সভাপতি ও স্থানীয় বিএনপি নেতার নিকট আছে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন কমিটির উপদেষ্টা ফয়জুল করিম, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সানোয়ার হোসেন, আহম্মদ আলী, আব্দুর রাজ্জাক ও পুকুরপাড় আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রওশন আলী সহ ওই বিএনপি নেতার কাছ থেকে চাবি চাচ্ছেন। কিন্তু ওই নেতা জানায় চাবিটি ক্লাবের সদস্য হেলালের কাছে রয়েছে। এ অবস্থায় শনিবার সন্ধ্যায় হেলালকে ডেকে নিয়ে এসে চাবিটি আওয়ামী লীগ নেতার কর্মীদের কাছে দেন ।
এরপরেও আওয়ামী লীগ নেতা ফয়জুল, সানোয়ার, রাজ্জাক, রওশন ও আহম্মদ আলীর নেতৃত্বে শতাধিক নেতা কর্মী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আব্দুস সালাম সহ তার লোকজনের উপর হামলা চালায়। এতে উভয় দলের অন্তত ২৫ জন নেতাকর্মী মারাত্মক আহত হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিরা হলেন, পুকুর পাড় গ্রামের বাসিন্দা ও বিএনপি কর্মী কালাম, আকরাম, সাদ্দাম, কালাম-২, গাজী, জব্বার, ঈমন, মমিন, ছাব্বির, শাহিন, হেলাল, তালেব, আলো প্রমানিক। এছাড়া আহত নিরজাপ, সাহাদত, ছানোয়ার হোসেনকে পাবনায় এবং আব্দুল মালেককে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
খবর পেয়ে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতা-কর্মীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।
খান মরিচ ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য জিন্নাহ আলী বলেন, শুনেছি ক্লাবের চাবি ও হিসাব নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ২০-২৫ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ক্লাবের চাবি নিয়ে হামলার ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় হামলাকারীদের মধ্যে পাঁচজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরিস্থিতি শান্ত আছে।
ঘটনার বিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার বলেন, আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এছাড়া গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পাবনা ও ঢাকা পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বর্তমানে সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
বিআরইউ