ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেদ্দা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রহিম উল্লাহকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। রোববার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যায় নিহত টমটম চালক জাফর আহাম্মদ হত্যা মামলায় ফেনী সদর আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাতেমা তুজ জোহরা মুনার আদেশে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
এ মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার (১২ অক্টোবর) রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-২।এরপর আদালত কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। আগামীকাল এ মামলায় তার রিমান্ড চাওয়া হবে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৩ আগস্ট শহরের ট্রাংক রোডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে টমটম চালক জাফর আহাম্মদ স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণ করেন। আন্দোলনে তার অংশগ্রহণের বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন অনলাইনে প্রকাশ হয়।
ওইদিন শর্শদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঁইয়াসহ আরও ১০-১১ জন আসামি জাফরের বাড়িতে গিয়ে হত্যার হুমকি দেন। পরদিন ৪ আগস্ট দুপুরের দিকে আন্দোলন চলাকালে জাফরকে ফেনী শহরের পুরাতন জেল রোডস্থ জেলা কারাগারের সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তা থেকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় গত ৫ সেপ্টেম্বর নিহত জাফরের স্ত্রী আছিয়া বেগম বাদী হয়ে ২০৫ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ১০০-১০৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
রহিম উল্লাহ ছাড়াও এ মামলায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ফেনী-৩ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য জেনারেল অব: মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ও ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।
ফেনী মডেল থানা ওসির মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলেন, টমটম চালক জাফর হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, হাজী রহিম উল্লাহ দীর্ঘ ২১ বছর ধরে আওয়ামী লীগের সৌদি আরবস্থ জেদ্দা শাখার সভাপতি ছিলেন। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ক্ষমতার সিঁড়ি বেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ফেনী-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
পরবর্তীতে ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জেনারেল অব: মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে সমর্থন দেয়ায় ভোট কারচুপি, এজেন্টদের বের করে দেওয়া ও ভোটকেন্দ্রে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে ফলাফল ঘোষণার আগ মুহূর্তে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।
আরএস