সদ্য প্রকাশিত উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে আফরোজা আক্তার মাফি।
অর্থাভাবে উচ্চ শিক্ষাগ্রহণের স্বপ্ন অনিশ্চিত মাফির। সে এ বছর কাউনিয়া মহিলা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। মাফির বাড়ি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার পাঞ্চরভাঙ্গা গ্রামে। পেপার বিক্রেতা আনোয়ার ও রাজিয়া দম্পতির কন্যা মাফি। মাফির মা পেশায় একজন গৃহিণী।
মাফি শিশুকাল থেকে নিদারুণ অর্থকষ্টের মধ্যে শুরু করেন পড়াশোনা। তার বাবা পেশায় একজন পেপার বিক্রেতা। নিজের জমিজমা তেমন না থাকায় পেপার বিক্রি করে কোনোমতে চলে তার সংসার। তিন বোনের মধ্যে মাফি বড়।
মাফির ছোট বোন প্রাইমারিতে পড়াশোনা করে। মাফি পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিওর ট্রেনিং করে পড়াশোনা খরচের জোগান দিত। শিক্ষাজীবন বারবার দারিদ্রতার কাছে হার মেনে থমকে যেতে চাইলেও মাফির অদম্য ইচ্ছা শক্তি এবং শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় ধারাবাহিকভাবে সাফল্য অর্জন করতে থাকে।
আফরোজা আক্তার মাফি জানায়, তার ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন সে বড় হয়ে ডাক্তার হয়ে অসহায় মানুষের ও দেশের সেবা করতে চান। সে লেখাপড়া ছাড়তে চান না। কিন্তু অভাবের কারণে তার পড়াশোনা বন্ধের পথে।
তিনি আরও বলেন- তার এই সফল ফলাফলের পিছনে পিতা মাতা ও শিক্ষকদের অবদান রয়েছে সবচেয়ে বেশি। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। ভবিষ্যৎ স্বপ্ন পূরণে সকলের দোয়া কামনা করি।
মাফির বাবা আনোয়ার হোসেন জানান, মেয়ের সফলতায় প্রথম থেকেই তিনি আনন্দিত। কিন্তু ৫ সদস্যের পরিবার চালাতে তিনি হিমশিম খান। সেখানে সন্তানকে কলেজে ভর্তি করা তার কাছে বিলাসিতা। মেয়েকে ডাক্তার বানানো তারও স্বপ্ন। কিন্তু তিনি টাকার কাছে অসহায়। এখন মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া তার কোনো অন্ত নেই। যদি কোনো সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা পান তা হলে লেখাপড়া করাতে চান সন্তানকে।
কাউনিয়া মহিলা কলজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. রফিকুল ইসলাম বলেন- অদম্য মেধাবী আফরোজা আক্তার মাফির প্রবল ইচ্ছাশক্তি, মানসিক দৃঢ়তা আর সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা ওর লক্ষ্যে পৌঁছে দিবে।
ইএইচ