চট্টগ্রামে এইচএসসি ফেল শিক্ষার্থীরা ঘেরাও করেছে শিক্ষাবোর্ড

চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২৪, ০৮:২৫ পিএম

চট্টগ্রামের এইচএসসি ফেল শিক্ষার্থীরা ঘেরাও করেছে শিক্ষাবোর্ড। তাদের অভিযোগ- পরীক্ষার খাতা না কেটে রেজাল্ট দিয়েছে বোর্ড। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ডেকে শিক্ষার্থীদের হেনস্তা করার অভিযোগ তোলা হয়েছে বোর্ড কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে বোর্ডের সামনে আন্দোলন শুরু করেন তারা। এ সময় বিভিন্ন কলেজের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি, আমাদের সঙ্গে বৈষম্য হয়েছে। খাতা না কেটেই বোর্ড কর্তৃপক্ষ মনগড়া রেজাল্ট দিয়েছে। ইংরেজিতে সহজ প্রশ্ন এসেছিল। আমরা ভালোভাবে প্রশ্নের উত্তরও লিখেছি। কিন্তু ফল প্রকাশের পর দেখলাম গণহারে ইংরেজিতেই ফেল করিয়ে দিয়েছে।

এ সময় শিক্ষার্থীরা সিলেট বোর্ডের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, সিলেট বোর্ডে মাত্র দুই বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে সবাইকে পাস করানো হয়েছে, অথচ চট্টগ্রাম বোর্ডে সব বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার পরও খাতা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। সঠিকভাবে সাবজেক্ট ম্যাপিং করা হয়নি বলেও দাবি করেন তারা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের চার বিষয়ের মোট ৭টা পরীক্ষা হয়েছে। দুই বিষয় মিলে ৬৬ নম্বর পেলেই পাস কিন্তু ৭৬ পাওয়ার পরেও ফেল দেওয়া হয়েছে। এটা কীভাবে সম্ভব? আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কায়সার নিলুফা কলেজের শিক্ষার্থী মাসুম খান বলেন, আমি বাংলা পরীক্ষা দিয়েছি। কিন্তু আমাকে অনুপস্থিত উল্লেখ করা হয়েছে। আজকে আমরা আন্দোলন করছি বলে আমাদেরকে মারার জন্য সমন্বয়কদের ডেকে আনা হয়েছে।

এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক রুবিনা খাতুন বলেন, আমার মেয়ে সবসময়ই ভালো রেজাল্ট করে। কিন্তু, এবার পরীক্ষায় সে দুই বিষয় মিলে মাত্র ৩ পেয়েছে। এটা কী মানা যায়? খাতা না কেটেই বোর্ড রেজাল্ট ঘোষণা করেছে। যা হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, আমার মেয়ের আইসিটি পরীক্ষা খুব ভালো হয়েছিল, অথচ ফেল দেখিয়ে দিয়েছে। এটাকে কী সঠিক মূল্যায়ন করা বলে?

আরেক অভিভাবক হাসান বলেন, আমার ছেলে ফিজিক্স পরীক্ষায় ১১০ পাওয়ার পরও রেজাল্টে ফেল এসেছে। যেখানে ৬৬ পেলেই পাস। আবার বাংলায় ৭৫ পেয়েছে, তাও ফেল।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি ওনাদের বলার পর তারা বলছেন, এমসিকিউতে খারাপ করেছে, তাই ফেল আসছে। কিন্তু আমি তো জানি, আমার বাচ্চা কেমন পরীক্ষা দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক আমিরুল মোস্তফা বলেন, এখানে নম্বর কমবেশি দেওয়াতে কারও হাত নেই। তারা যেভাবে পরীক্ষা দিয়েছে সেভাবেই রেজাল্ট আসছে।

৬৬ তে ১১০ পাওয়ার পরও ফেল আসার আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের লিখিত এবং এমসিকিউতে আলাদা আলাদা পাস করতে হয়। কেউ যদি একটি বেশি, অন্যটিতে পাস মার্কের কম নম্বর পায় তাহলে ফেল আসবে। তারপরও যদি কারও আশানুরূপ ফল না পায় তাহলে তো অবশ্যই তা পুনঃনিরীক্ষণ করার সুযোগ আছে। আর পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন গতকাল থেকে শুরু হয়েছে। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই করে আবার রেজাল্ট দেওয়া হবে।

সমন্বয়ক ডেকে হেনস্তা করার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এই বোর্ড কর্মকর্তা বলেন, সকালে শুনেছি সমন্বয়কদের একটি গ্রুপ এসেছিল। কিন্তু, তাদের সঙ্গে এখন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কোনো সম্পর্ক নেই।

ইএইচ