নান্দাইল সবজির বাজারে অস্বস্তি

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৪, ০৫:২১ পিএম

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের জীবন-যাপন।

স্বল্প আয়ের বাজার খরচে জীবন-যাপন পরিচালনা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে অতি সাধারণ জনগোষ্ঠীর। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেকটায় স্বস্তি নেমে এসেছিল নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যে। তবে সে স্বস্তি অস্বস্তি হতে সময় লাগেনি বেশি।

দুই সপ্তাহেরও কম সময়ে আবারও ঊর্ধ্বমুখী হয় সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। উৎপাদনকারী থেকে বেশ কয়েকটি ধাপ অর্থাৎ হাত বদলে এর দাম দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ হয়ে যায়।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং না করায় বাজার সিন্ডিকেট ব্যবাসায়ীরা এই সুবিধা নিচ্ছে। ফলে নিম্ন ও মধ্যবিত্তেরা এখন জমি বন্ধক ও ঋণ করে কোন রকমে খেয়ে না খেয়ে জীবনধারণ করছেন। দেশের মানুষ মাছে-ভাতে বাঙালি হলেও এখন দু-মুঠো ভাত জোগাড় করতে পারলেও মাছ পাওয়া যেন কঠিন হয়ে পড়েছে।

মাছ ও মাংস সপ্তাহে একদিনেও অনেকের খাবার টেবিলে জুটে না। ডালও ১৪০ টাকা কেজির উপরে। বাড়িতে স্বজনদের আদর-আপ্যায়নে এখন ডিমই একমাত্র ভরসা ছিল।

কিন্তু সেই ডিমের দামও এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। প্রতি ডিম ১৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।  যদিও সরকারি নির্ধারিত মূল্য প্রতি পিস ডিম ১১ টাকা ৭৫ পয়সা। এ যেন ঘোড়ার দৌড়ের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যে দিনদিন বেড়েই চলছে, দ্রব্যমূল্য হ্রাসের কোন সম্ভবনা নাই।

সবজির বাজারে একমাত্র পেঁপে সাধারণ মানুষের ভরসা। শুধুমাত্র লবণ ও বিভিন্ন শাক ব্যতীত চাল, ডাল, তেল, মাছ, মাংস, তরি-তারকারি ও ডিম সবকিছুই নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে। তবে চালের বাজারে স্বস্তি থাকলেও মশলা ও ফলমূলের বাজারে আগুন (কড়া দাম)। সবজির বাজারে একমাত্র পেঁপেই স্বস্তি। ২০ টাকা কেজি থেকে ৪০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে।  

এদিকে উপজেলা প্রশাসন নরীব ভূমিকায় থাকায় দ্রব্যমূল্য মনিটরিং করা হচ্ছে না। ফলে সরকারের নির্ধারিত বাজার মূল্যের কোন প্রভাব পড়ছে না। সমাজের নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা কাউকে কিছু বলতে না পেরে মুখ বুঝে সহ্য করে অসহায়ের মতো জীবন-যাপন করছেন।

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারমূল্য ও যানবাহনের উর্ধ্বগতি ভাড়া প্রদানে সাধারণ মানুষের যেন নাভিশ্বাস।

সরেজমিনে উপজেলার বেশ কয়েকটি বাজার পরির্দশন করে জানা গেছে, বাজারে কাঁচা মরিচ ও আদার ঝাঁজ বেশি। কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি খুচরা মূল্য ৪০০ টাকা ও আদা ৩০০ টাকা কেজি।

যদিও পাইকারি বাজারে কাঁচার মরিচ প্রতিকেজি ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজি।

এদিকে গরুর মাংস ৬৫০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকা কেজি, খাসির মাংস ১০০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা কেজি, মাছে কমন আইটেম পাঙাস মাছ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত, সাদা ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা কেজি, কক মুরগি ২৭০ টাকা ও দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি।

এছাড়া দেশি মশুরের ডাল ১৪০ টাকা, বিদেশি ১১০ টাকা, চিনি প্রতিকেজি ১৪০ টাকা, ডিম ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা হালি, সয়াবিন তেল প্যাকেটজাত প্রতিকেজি ১৭০ টাকা ও খোলা তেল ১৭৫ টাকা কেজি, মোটা চাল প্রতি কেজি ৬০ টাকা ও চিকন চাল ৭০ টাকা কেজি।

এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলার মানবাধিকার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি বাজার মনিটরিং করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরুণ কৃষ্ণ পাল খুব শিগগিরই বাজার মনিটরিংয়ের বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন।

ইএইচ