নাগরপুরে অস্থির চালের বাজার

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২৪, ০৩:০৬ পিএম

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে গত দুই সপ্তাহে ৩ দফায় বেড়েছে চালের দাম। আটাশ, উনত্রিশ, মিনিকেটসহ বস্তাপ্রতি চালের প্রকারভেদে দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা। এতে মরার উপর খাঁড়ার ঘা অবস্থা মানুষের।

মিস্ত্রির কাজ করি। দিনে যা ইনকাম হয় তা দিয়ে দুইবেলা খাবার জোটে না। সবজির যে দাম তাতে আলুভর্তা দিয়ে এখন ভাত খাওয়া মুশকিল। তার ওপর চালের দাম বাড়ছে। এভাবে কি বেঁচে থাকা যায়? বাসায় মা ও স্ত্রী অপেক্ষা করছে বাজার করে নিয়ে গেলে খাবে, সেটা তো হচ্ছে না। আবেগকে খুব কষ্টে নিয়ন্ত্রণ করে এভাবেই জীবনের কঠিন বর্ণনা দিচ্ছিলেন রাজমিস্ত্রি মোহাম্মদ শাহআলম।

দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধির মধ্যে নতুন করে চালের দাম বৃদ্ধির আঘাতটা নিতে পারেননি তিনি। বক্তব্যে ফুটে উঠেছে স্পষ্টভাবে। সংসার চালানোর দায়িত্ব থেকে নিজেকে সরাতে পারবেন না, তাই দিনের রোজগারের অর্ধেক দিয়ে বাসায় বৃদ্ধা মা ও স্ত্রী মুখে ভাত তুলে দিতে মাত্র দুই কেজি চাল কিনে ঘরে ফিরছিলেন তিনি।

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে মোহাম্মদ শাহআলমের মতো খেটে খাওয়া মানুষের এমন করুণ অভিযোগ বেশ পুরোনো।

বুধবার নাগরপুর সদর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিআর-২৯ বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৬৪ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫৮ টাকা কেজি। স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫৫ টাকা। মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি, এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭৫ টাকা। নাজির শাইল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭৫ টাকা কেজি।

নাগরপুর বাজারে চাল কিনতে আসা অপর এক ক্রেতা মো. হালিম মিয়া বলেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশের মানুষের প্রত্যাশা ছিল কমবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। অথচ হয়েছে তার উল্টোটা। নিত্যপণ্যের বাজারের পাশাপাশি হঠাৎ কেন অস্থির হলো চালের বাজার? কে বা কারা নিয়ন্ত্রণ করে এ বাজার?

নাগরপুর বাজার চাল ব্যবসায়ী মেসার্স নাগরপুর রাইস মিল ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. বাবু মিয়া। বহু বছর ধরে পাইকারি চাল বিক্রির ব্যবসা করছেন। তিনি বলেন, চালের দাম বৃদ্ধি নিয়ে আমাদের কোনো হাত নেই। বৃষ্টিবাদলে চালের দাম কিছুটা বাড়লেও মিল মালিকরা অবৈধভাবে মজুদ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছে। চালের দাম বাড়া-কমার খেলা খেলে মিল মালিকরা। আমাদের হাতে কিছু নাই। বাজারে তো মালের সংকট নাই। অথচ বিক্রি নাই। বন্যার কারণে বাজারে সংকট সৃষ্টি করে দামটা বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা বস্তা প্রতি একটু লাভ পাইলে মাল ছেড়ে দেই।

ইএইচ