ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তির অভিযোগে হৃদয় পাল (১৮) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।
সোমবার দুপুর ৩টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে কলেজ শিক্ষার্থীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দিয়ে তাকে সেনা হেফাজতে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে, বেলা সাড়ে ১২টা থেকে কাদিরদী ডিগ্রি কলেজ চত্বরে জড়ো হতে থাকে সাতৈর ইউনিয়নের কাদিরদীসহ বিভিন্ন এলাকার বিক্ষুব্ধ জনতা।
সরেজমিন ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, জেলার বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী হৃদয় পাল ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে কটূক্তি করে একটি স্টোরি আপলোড করেন। এ খবর জানা জানি হয়ে পড়লে কাদিরদী কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়লে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে অধ্যক্ষের রুমে নিয়ে বিষয়টি জানার চেষ্টা করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। মুহূর্তে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের কয়েকটি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা কলেজ চত্বরে জড়ো হয়ে হৃদয় পালকে তাদের হাতে তুলে দিতে দাবি জানাতে থাকে।
এ সময় অধ্যক্ষের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্র-জনতা। বিক্ষুব্ধ জনতা মারমুখী হয়ে পড়লে সাতৈর ইউপি চেয়ারম্যান রাফিউল আলম মিন্টু ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা চালান।
এ সময় বিক্ষুব্ধরা কলেজের জানালার গ্লাস, ফুলের টপ, কয়েকটি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে।
খবর পেয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান চৌধুরী, বোয়ালমারী থানার ওসি মো. গোলাম রসুল পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে বিক্ষোভকারীদের সাথে কথা বলেন।
এদিন বিকাল ৩টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষুব্ধ জনতার দাবি মেনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কূটক্তিকারী হৃদয় পালকে বের করে সেনাক্যাম্পে নেওয়ার সময় উত্তেজিত বিক্ষুব্ধ জনতা জুতা স্যান্ডেল ও ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে।
অভিযুক্ত হৃদয় পাল বলেন, আমি মোবাইল ব্যবহার করি না। আমার নামের ফেসবুক আইডি গত দুই বছর আগে হ্যাক হয়েছে। হ্যাক হওয়া আইডি থেকে দুই বছর আগে মহানবীকে (সা.) নিয়ে একটি আপত্তি জনক পোস্ট করে অন্য কেউ। ইতোপূর্বে এ বিষয়ে থানা পুলিশ তদন্ত করে আমার সাথে বিষয়টির সম্পৃক্ত পায়নি। এরপর থেকে আমি মোবাইল ব্যবহার করি না।
কাদিরদী কলেজের অধ্যক্ষ নুরুজ্জামান মোল্যা বলেন, মহানবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি করায় একটি উদ্ভূত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ইউএনও, পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন। সেনাবাহিনী ছেলেটিকে হেফাজতে নিয়ে গেলে এলাকার পরিবেশ শান্ত হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভির হাসান চৌধুরী বলেন, কাদিরদী কলেজের শিক্ষার্থী হৃদয় পালের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। বিক্ষোভকারিদের দাবির প্রেক্ষিতে তাকে সেনা হেফাজতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী তদন্তপূর্বক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ইএইচ