ক্রাচে ভর দিয়ে চলছে জীবন; সম্বল কেবল একটি চায়ের দোকান

মো. সাজু মিয়া, কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট) প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৪, ০৬:২৩ পিএম

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের আব্দুর রহমান১৭ বছর আগে দুর্ঘটনায় এক পা হারিয়ে সহযোদ্ধা স্ত্রীর সহযোগিতায় কর্মের মাধ্যমে নিজের ও পরিবারের রোজগার চালিয়ে যাচ্ছেন। অদম্য আব্দুর রহমানের পাশে ছায়া হয়ে সারাক্ষণ জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন স্ত্রী আনোয়ারা বেগম। আধুনিক যুগের তথাকথিত প্রেম ভালোবাসাকে হার মানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্বামীর সেবা, সন্তান লালন পালনসহ ছোট্ট দোকানের কার্যক্রমেও সার্বক্ষণিক লেগে থাকছেন তিনি। এ নিয়ে এলাকাজুড়েও রয়েছে এই জীবন যোদ্ধা দম্পতির ভূয়সী প্রশংসা। আর্থিক সাহায্য ও কৃত্রিম পা লাগানোর ব্যবস্থা করা হলে নিজেকে আরও বেশি কর্মক্ষম ও ব্যবসার পরিধি বাড়াতে পারবেন তারা।

দুই মেয়ের বাবা আব্দুর রহমান নিজের ও সংসার চালাতে ভিক্ষাবৃত্তি কিংবা অন্যের দারস্ত না হয়ে নিজেই কর্মের পথ বেচে নেন। ধার দেনা করে রাস্তার পাশে ২০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করেন ছোট্ট চায়ের দোকান। স্ত্রীর সার্বক্ষণিক সহযোগিতায় চায়ের পাশাপাশি অন্যান্য মালামাল বিক্রি করে চলে তার পরিবার ও মেয়েদের পরাশুনার খরচ, সুস্বাদু চায়ের সাথে অসাধারণ দাম্পত্যের গল্প শুনে অনেকেই ছুটে আসেন তার দোকানে।

অবসর সময়ে চায়ের আড্ডায় মাতেন স্থানীয়রা।

কৃত্রিম পা লাগিয়ে আরও বেশি গতিশীল করতে সরকারি সহযোগিতা ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান এলাকাবাসীর।

চুন থেকে পান খসলেই ডিভোর্স কিংবা অবিশ্বাসের নানা ঘটনা চারিদিকে নজরে আসে। সেখানে দীর্ঘ সময়েও অচল স্বামীর পাশে স্ত্রীর এমন সহযোগিতার সত্যিই প্রশংসনীয়।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সুকান্ত সরকার বলেন, আব্দুর রহমানের একটা পা না থাকা শর্তেও তিনি ছোট্ট একটা চায়ের দোকানের আয় দিয়ে পরিবার নিয়ে  জীবিকা নির্বাহ করছেন। সত্যি এটা প্রশংসনীয়, যে তিনি হাত না পেতে দুটো বাচ্চা নিয়ে চলছেন। সমাজসেবা দপ্তর থেকে তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে আমাদের এবং  তার একটা কৃত্রিম পায়ের ব্যবস্থা করার জন্য উপজেলা সমাজসেবা অফিস বরাবর একটি আবেদন করতে বলা হয়েছে, আবেদন করলে আমরা তার সমাজ সেবা দপ্তর থেকে কৃত্রিম পায়ের ব্যবস্থা করে দিবো।

আরএস