বঙ্গোপসাগরের নাফ নদী মোহনায় মাছ শিকারের সময় অস্ত্রের মুখে ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ জেলেকে একদিন পরও ফেরত দেয়নি মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। গত সোমবার বিকেলে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের অদূরে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে ১৫টি নৌকা, জালসহ তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হওয়া। এতে ওই জেলেদের পরিবার আতঙ্কে রয়েছে। অবশ্য বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি জানিয়েছে, তারা জেলেদের ফেরত আনার চেষ্টা চালাচ্ছে।
টেকনাফ-২ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, দুই-এক দিনের মধ্য ওই জেলেদের ফেরত আনা সম্ভব হবে। এ ঘটনায় বিজিবি কড়া প্রতিবাদও জানিয়েছে।
ওই জেলেরা হলেন-
মো. হাসিম (৩০), মো. হোছেন (২০), মহিউদ্দিন (২২), এনায়েত উল্লাহ (৩২), আব্দুল শুক্কুর (৩৫), নুর হাফেজ (২২), মো. ইয়াছিন (৩০), আবদুর রহিম (২৪), হাসান আলি (৩৩), ওসমান গনি (৩০), শাহ আলম (২২), আসমত উল্লাহ (২০), আব্দুল শুক্কুর (২৬), আবুল হোসেন (১৭), আয়ুব খান (৩০), নুর হোসেন (২২), মো. বেলাল (১৮), মো. সলিম (২৭), আবদুল কাদের (২২) ও ইবনে আমিন (৩৫)। তারা সবাই শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা।
আরাকান আর্মির নিয়ে যাওয়া একটি নৌকার মালিক শাহপরীর দ্বীপ ইউপির সদস্য আবদুস সালাম বলেন, একদিন পরও জেলেদের ফেরত আনতে না পারায় পরিবারগুলো নানা আশঙ্কার মধ্যে রয়েছে।
অপহৃত ইবনে আমিনের বাবা নাছির উদ্দিন বলেন, ছেলে ছিল পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস। তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ায় খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। এর আগে মিয়ানমার নৌবাহিনীর গুলিতে আমাদের জেলের মৃত্যুও হয়েছে।
স্থানীয় জেলে নুর আলম বলেন, এর আগেও কয়েকবার জেলেদের ধরে নিয়ে গিয়েছে মিয়ানমারের বাহিনী। এ কারণে জেলেরা খুব ভয়ের মধ্য আছেন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আদনান চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় জেলেদেরও ভুল রয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সংঘর্ষের কারণে নাফ নদীতে মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে জেলেরা তা অমান্য করছেন। এ বিষয়ে তাদের সচেতন করার চেষ্টা চলছে।
এর আগে ৯ অক্টোবর গভীর সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ছয়টি ট্রলারসহ ৫৮ জেলেকে অপহরণ করে মিয়ানমার নৌবাহিনী। ওই সময় তাদের গুলিতে তিন জেলে গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে একজন ঘটনাস্থলে মারা যান। পরে অবশ্য ওই জেলেদের ফেরত দেয় দেশটি।
আরএস