কুয়াকাটায় তীর্থ যাত্রীদের ঢল

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২৪, ০৩:৫৯ পিএম

প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পূর্ণিমা তিথিতে সাধু-সন্যাসী, পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। পূজা আর্জনায় ব্যস্ত রয়েছে পূর্নার্থীরা।

রাস পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে গত ২০০ বছর ধরে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এ উৎসবটি পালন করে আসছে। এদিনটিতে সাগরের নীল জলে গঙ্গাস্নানের মাধ্যমে জাগতিক সমস্ত পাপ ধুয়ে মুছে ছাপ হবে এমনটাই বিশ্বাস ভক্তদের।

এ উপলক্ষ্যে কুয়াকাটার শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির প্রাঙ্গণসহ পর্যটন স্পটে প্রায় তিন লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে এমনটাই জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।

পর্যটক ও পুণ্যার্থীদের আগমনে উচ্ছ্বসিত স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বিক্রিও বেড়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে।

শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে সৈকতের প্রতিটি স্পটজুড়ে রয়েছে লোকের সমাগম।

সকাল থেকেই সনাতন ধর্মের লোকেরা ধর্মীয় আচার আচরণ পালন করার জন্য শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও আশেপাশে আসন পেতে বসতে শুরু করছে।

রাস উৎসবে অংশগ্রহণ করা স্বজল কর্মকার বলেন, সারা বছর অপেক্ষা করি এ দিনটির জন্য। আমি ৫ বছর ধরে স্নানে আসি এবং আমি আমার মানত করা পূজা দেই গঙ্গায়। যাতে গঙ্গা মা আমাকে মঙ্গল করে।

কুয়াকাটার রাস পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কাজল বরন দাস জানান, শুক্রবার সকাল ৫টা ৪৩ মিনিট থেকে শুরু হয়েছে পূর্ণিমা, থাকবে শনিবার সকাল ৩ টা ৩২ মিনিট পর্যন্ত। তাই প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পূর্ণিমার এ তিথিতে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পাপ মোচন ও পুণ্য লাভের আশায় সমুদ্রে পুণ্যস্নান করবেন।

কুয়াকাটা রাস পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পুরোহিত ইঞ্জিনিয়ার নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেন, শুক্রবার   সন্ধ্যায় পূজার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর রাতভর চলবে নাম কীর্তন, ভাগবৎ পাঠ ও আরতি। শ্রীকৃষ্ণের লীলা কীর্তনে অংশগ্রহণ করবেন ভারতের কবিতা ঘোষ।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাবীবুর রহমান জানিয়েছেন, গতকাল থেকেই পুরো কুয়াকাটা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। কোন দুষ্কৃতকারী যেন কোন সমস্যা না করতে পারে সে বিষয় সজাগ রয়েছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শত বছর ধরে চলে আসা রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নান  উপলক্ষ্যে আমরা ধারণা করছি তিন লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে। কুয়াকাটায় পূণ্যস্নানে আগত পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা, উপজেলা ও পৌর  প্রশাসনের সমন্বয়ে একটি নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও সার্বক্ষণিক  থানা পুলিশ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, টুরিস্ট পুলিশ এবং গ্রাম পুলিশসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তার জন্য কাজ করছেন।

ইএইচ