ফেনীতে যুবলীগ নেতাকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী ও সাবেক পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকার এবং সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সহ ৯৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর শাখাওয়াত হোসেন ভূঞা বাদী হয়ে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করে ফেনী মডেল থানার ওসি মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলেন,উক্ত মামলায় ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০ জন পুলিশ সদস্যসহ আরও ৩০ থেকে ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এতে নিজাম হাজারী ও সাবেক পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকার ছাড়াও সাবেক সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল, সাবেক ডিএসবি শাখার এএসপি আমিনুল ইসলাম, ফেনী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আজিজ, জেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক শরীফ উল্ল্যাহ, ফেনী মডেল থানার সাবেক ওসি আবদুল কালাম আজাদ, জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি রাশেদ খাঁন চৌধুরী, ফেনী মডেল থানার সাবেক এএসআই নজরুল ইসলাম, মাহাবুবুর রহমান, জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি রাশেদ হাজারী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শেখ আবদুল্লাহসহ প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, এর আগে সাবেক জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর শাখাওয়াত হোসেন ভূঞা বাদী হয়ে নিজাম হাজারীর সংসদ সদস্য পদের অবৈধ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। ওই বিষয়কে কেন্দ্র করে ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ ৩ দফায় নিজাম উদ্দিন হাজারীর নির্দেশে বাদী শাখাওয়াতের বাড়িতে ও তার ওপর হামলা হয়।
বাদীর দাবি তখন ফেনী মডেল থানার সাবেক ওসি আবুল কালাম আজাদ, সাবেক জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি রাশেদ খাঁন চৌধুরী, ফেনী মডেল থানার সাবেক এসআই নজরুল ইসলাম, মাহাবুবুর রহমানসহ অজ্ঞাত ১৫ থেকে ২০ জন অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্যসহ আরও ৩০ থেকে থেকে ৪০ জন নিজাম হাজারীর সন্ত্রাসী তাঁর বাড়ি ঘেরাও করে।
একপর্যায়ে বাড়ির লোহার দরজা ভাঙতে না পেরে ফেনী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আজিজের মাধ্যমে দেয়াল ভাঙার সরঞ্জাম এনে অবৈধভাবে ভেতরে প্রবেশ করে তারা শাখাওয়াতকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করার সময় তার বৃদ্ধ মা বাঁধা দিলে এসআই নজরুল উনার গায়েও হাতে তুলে।
এর আগে নিজাম হাজারীর সন্ত্রাসীরা শাখাওয়াতের বাড়ি ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে আলমারিতে থাকা ১০ ভরি স্বর্ণালংকারসহ নগদ আরও এক লাখ টাকা নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে শুসেন চন্দ্র শীলের নেতৃত্বে নিজাম হাজারীর সন্ত্রাসীরা শাখাওয়াতকে চোখ ও হাত বেঁধে হত্যা করার উদ্দেশ্যে সিএনজি অটোরিকশা তুলে মহিপাল সংলগ্ন একটি অজ্ঞাত বাড়িতে নিয়া যায়।
এরপর তৎকালীন পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকারের নির্দেশে এএসপি আমিনুল ইসলাম ও এসআই নজরুল ভিডিও কলে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ নিজাম হাজারীকে ফোনে লাইভ যুক্ত করলে তিনি শাখাওয়াতকে ক্রসফায়ার করে হত্যা করার নির্দেশ দেয়।
বিআরইউ