পরিবেশ রক্ষায় কলাপাতায় বিক্রি হচ্ছে লবণ

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২৪, ১২:০২ পিএম

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিবেশ রক্ষার্থে পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও প্রশাসনের নজরদারি বা তৎপরতা না থাকার কারণে সরকারের এই আইনকে উপেক্ষা করে ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার গুলোতে যখন ক্রেতা এবং বিক্রেতারা যত্রতত্র ভাবে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার অবাধে করে যাচ্ছে।

ঠিক তখনি পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধের সরকারের সিদ্ধান্ত কে স্বাগত জানিয়ে পরিবেশ রক্ষার্থে নিজ উদ্যোগে কলাপাতায় লবণ বিক্রি করে সবার নজর কেড়েছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার খড়িবাড়ি বাজারের ৩৫ বছর ধরে খুচরা লবণ ব্যবসায়ী শমসের আলী। গত এক সপ্তাহ ধরে তার দোকানে খড়িবাড়ি বাজারে কলাপাতা দিয়ে মোড়ানো হাফ কেজি, ১ কেজির লবণের প্যাকেট তৈরি করে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন তিনি। তার এই কলাপাতা মোড়ানো লবণের প্যাকেট ও দোকানের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করেছেন। অনেকেই তার দোকানে প্রাচীন পদ্ধতির এই ব্যতিক্রম উদোগ দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। পলিথিনের ব্যবহার কমাতে কলার পাতা সহজলভ্য, প্রাকৃতিকভাবে এটি পচনশীল এবং পরিবেশবান্ধব, যা পরিবেশ রক্ষা ও সচেতনতার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

কলাপাতায় লবণ কিনতে আসা আলিম উদ্দিন সলিমুদ্দিন ও এলাকাবাসী জাহিদুল হক ও শাহানুর মিয়া জানান, ২৫ থেকে ৩০ বছর আগে আমরা বিভিন্ন পাতায় লবণ কিনতাম, কিন্তু ২০ বছর ধরে আমরা পলিথিনের লবণ কিনে আসছি, হঠাৎ করে শমসের আলী দোকানে কলা পাতায় মোড়ানো লবণ বিক্রির দৃশ্য দেখে আমাদের খুবই ভালো লাগছে, মনে হচ্ছে সেই পুরনো দিনে আমরা ফিরে গেছি।

কলাপাতায় খুচরা লবণ ব্যবসায়ী শমসের আলী জানান, দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে লবণের ব্যবসা করে আসছি সরকারের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বাজারে কলাপাতা দিয়ে মোড়ানো ১ কেজি, হাফ কেজি ওজনের লবণ পাতায় মুড়িয়ে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছি। পরিবেশ রক্ষায় পলিথিনের বিকল্প কলাপাতা ব্যবহার করলেও কোনো কোনো ক্রেতা অনাগ্রহ প্রকাশ করলেও কলাপাতা পদ্মপাতাসহ প্রাকৃতিক পন্যে লবণ বিক্রি করে যেতে চান এ ব্যবসায়ী।

প্রত্যন্ত গ্রামের এ ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীর পলিথিন বর্জনকে স্বাগত জানিয়ে কাশিপুর ডিগ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ হেল বাকী জানান, গোটা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা যেমন বিষাক্ত পলিথিন বর্জন করবেন তেমনি উৎপাদনকারীরাও নিবৃত হবেন। তবেই আমাদের পরিবেশ তার স্বাভাবিকতা ফিরে পাবে। পরিবেশ রক্ষায় শমসের আলীর উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।

বিআরইউ